কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে পাস হওয়া বিল ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সরকারের পাশে দাঁড়ালেন সরকারপন্থী প্রাক্তন উপাচার্যদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রীকেই আচার্য করার পক্ষেই মত দিলেন তাঁরা।


পঞ্চায়েত ভোটের মুখে গ্রাউন্ড জিরোয় রাজ্যপাল। অভিযোগ পেলেই ছুটে যাচ্ছেন কোচবিহার থেকে ক্যানিং। যা নিয়ে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাত ক্রমশ চড়ছে সিভি আনন্দ বোসের। সেই প্রেক্ষাপটে এবার এবার মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে পাস হওয়া বিল ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপচার্য নিয়োগ নিয়ে আসরে নামল সরকারপন্থী প্রাক্তন উপাচার্যদের একাংশ! সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেন ৯ জন প্রাক্তন উপচার্য ও সহ উপাচার্য। 


প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৩ জুন, মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করতে চেয়ে বিধানসভায় পাস হয়, দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২। সেইসময় রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনকড়। বর্তমানে তাঁর জায়গায় রাজ্যপাল হয়ে এসেছেন সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু সূত্রের খবর, রাজ্যপাল বদলে গেলেও, সেই বিলে এখনও সম্মতি মেলেনি! এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীকেই আচার্য করার দাবি জানালেন, সরকারপন্থী প্রাক্তন উপাচার্যরা। 


কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ উপাচার্য গৌতম পাল বলেন,  'মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার বিল পাস হয়ে হেছে। রাজ্যপালের কাছে। মুখ্যমন্ত্রী যদি আচার্য হন, তাহলে সমন্বয়সাধন করতে সুবিধা'। সরকারপন্থী এই অংশের দাবি, উপাচার্য নিয়োগ না করার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে অসুবিধা হচ্ছে। নীতিগত ও আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না! জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতেও অসুবিধা হচ্ছে! 


আরও পড়ুন, আগের নির্বাচনের টাকা বকেয়া, হয়নি ভাড়াবৃদ্ধি, পঞ্চায়েতে এবার হুঁশিয়ারি বাস ও পেট্রোল পাম্প মালিকদের


এই প্রেক্ষাপটে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে, সরব হয়েছেন প্রাক্তন উপচার্য ও সহ উপাচার্যরা। যার মধ্যে অন্যতম উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র! যাঁর বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টা আগেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। সে প্রসঙ্গে ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেছেন, ৩১টির মধ্যে একটারও উপাচার্য নেই। রাজ্যপাল ১৩ জন প্রফেসরকে সামলাতে বলেছেন। তাঁরা অন্তর্বর্তী উপাচার্যও নন। আচার্য মন্ত্রীর হাত ধরে সমস্যার সমাধান করতে হবে।


অন্যদিকে, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপচার্য নিয়োগের দাবিকে সমর্থন করলেও, একজন শিক্ষাবিদ বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকেই আচার্য হিসেবে নিয়োগের দাবি জানিয়েছে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন। জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের কথায়, 'অবিলম্বে উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে আচার্য নয়, শিক্ষাবিদকে আচার্য চাই।' 


বর্তমানে রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অভিভাবকহীন। শিক্ষাবিদদের অনেকে একে উচ্চশিক্ষায় সঙ্কট বলেও মনে করছেন।