কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: মুহূর্তে নিস্তব্ধ পাম অ্যাভিনিউ। চলে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অসুস্থ ছিলেন বেশ কিছু বছর ধরেই, কিন্তু হঠাৎ করে তাঁর চলে যাওয়া এখনও মেনে নিতেই পারছেন না রাজনৈতিক মহল থেকে অনুরাগীরা। দীর্ঘদিন ধরেই ফুসফুসে সংক্রমণে ভুগছিলেন বুদ্ধবাবু। গতকাল থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। কিন্তু আজ সকালেই যে তিনি পাড়ি দেবেন নশ্বর থেকে অবিনশ্বরে তা অকস্মাৎ।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আজ সকালেও স্বাভাবিক ছিলেন, শেষ মুহূর্তে লড়াই ছাড়েননি, সেই স্মৃতি উঠে এল তাঁর পরিচারক হরেন অধিকারীর কথায়। এবিপি আনন্দকে জানালেন, 'ঘুম থেকে ওঠার পর প্রতিদিনের মতোই চা-বিস্কুট খেতে চাইলেন, দেওয়া হল সকাল ৭টা নাগাদ। এরপর জলখাবারও খান। এরপরই ওষুধ দেওয়া হয়। বেশ কিছু দিন ধরেই ওষুধ গুঁড়ো করে জলের সঙ্গে দেওয়া হত। এদিনও তাই দেওয়া হয়। কিন্তু ওষুধ আর খেতে পারেননি, বের করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারকে ফোন করা হয়। পরামর্শ মেনে বাইপ্যাপ দেওয়ায় হয়। চিকিৎসকও চলে আসেন। এসেই উনি দেখেন যে আর নেই। এক্সপায়ার করে গেছেন'।
পরিচারকের কথায়, 'শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা ছিলই। ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ধাত ছিল। সিওপিডির পেশেন্ট ছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। আজ সকালে জ্বরও আসেন। ডাক্তারের কথা মেনে আজ সকালে প্যারাসিটামলও দেওয়া হয়। আজ ওষুধ খাওয়ানোর সময় ফের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বাইপ্যাপ দেওয়া হয়। কিন্তু সেটা নেওয়ার পরই আর...'
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণের খবরে পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে ছুটে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে তিনি বলেন, 'বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর আকস্মিক প্রয়াণে আমি মর্মাহত। বিগত কয়েক দশক ধরেই আমি তাঁকে চিনতাম এবং গত কয়েক বছরে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন আমি কয়েকবার তাঁকে বাড়িতে দেখতে গেছি। এই মুহূর্তে আমি খুব দুঃখিত বোধ করছি। এই শোকের সময়ে মীরাদি এবং সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।'
আজ দুপুর ১টা ৪৩। পাম অ্যাভিনিউয়ের ২ কামরার ফ্ল্যাট থেকে শেষ বারের মতো বেরিয়ে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিনের পথ চলার সঙ্গী, সহযোদ্ধা যে আর নেই। চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন বুদ্ধদেব!
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে