বিটন চক্রবর্তী, তমলুক: বয়স কেবলমাত্র সংখ্যাই। তার বাইরে আর কিছু নয়। হাতে-কলমে তার প্রমাণ দিলেন প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ (Lakshman Chandra Seth)। ৭৪ বছর বয়সে সাতপাকে বাঁধা পড়লেন তিনি। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার বিয়ে সারলেন বঙ্গ রাজনীতির বিতর্কিত এই নেতা। আইনি মতে আপাতত বিয়ে সেরেছেন। সামনে রয়েছে জমকালো অনুষ্ঠানও। তবে তাঁর এই বিয়ে নিয়ে পরিবারে অসন্তোষ রয়েছে বলে খবর (Lakshman Seth Marriage)। 


রাজ্য রাজনীতির অন্যতম বিতর্কিত চরিত্র লক্ষ্মণ শেঠ। এককালের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা। তাঁর প্রতাপে এককালে কার্যতই বাঘে-গরুতে জল খেত একঘাটে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ভাগ্য বদলেছে তাঁরও। এককালের প্রভাবশালী এই নেতাকে এখন প্রায় কেউই ডাকে না। তাতে যদিও বিশেষ প্রভাব পড়েনি তাঁর জীবনে। বরং ৭৪ বছর বয়সে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন। 


গত ২৪ মে দ্বিতীয় বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন লক্ষ্মণ। পাত্রী মানসী দে। কলকাতার একটি বহুজাতিক হোটেল গোষ্ঠীর এক পদস্থ আধিকারি। বয়স ৪২ বছর। গত সপ্তাহে তাঁর সঙ্গে আইনি বিবাহ সেরেছেন লক্ষ্মণ। তমালিকার আগের পক্ষের একটি ছেলেও রয়েছে। আগামী ২৪ জুন জমকালো অনুষ্ঠান করবেন। লোকজন ডেকে হবে প্রীতিভোজ। সেখানে বাঙালি রীতি-রেওয়াজ মেনে সাতপাকে বাঁধা পড়বেন নবদম্পতি। 


আরও পড়ুন: School Reopen : গরমের ছুটি কাটিয়ে ৫ জুন রাজ্যে খুলছে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্কুল


লক্ষ্মণের প্রথম স্ত্রী তমালিকা পন্ডা শেঠ। ২০১৬ সালে তিনি মারা যান। তাঁদের দুই ছেলে। এ বার দ্বিতীয় বিয়ে সারলেন লক্ষ্মণ। মানসীর সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠের মাধ্যমে লক্ষ্মণের আলাপ বলে জানা গিয়েছে। দেখা-সাক্ষাতের বেশ কিছু দিন পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।  মানসী কলকাতা থাকেন। তমলুকে নিজেক স্বেচ্ছেসেবী সংস্থা 'আইকেয়ার' চালান লক্ষ্মণ। বিয়ের পর কলকাতায় তিনি আসা যাওয়া করবেন বলে খবর। তবে পরিবার সূত্রে খবর, লক্ষ্মণের এই দ্বিতীয় বিবাহ মেনে নিতে পারেননি তাঁর আগের পক্ষের দুই ছেলে। সেই নিয়ে অশান্তি শুরু হয়েছে পরিবারে। 


বঙ্গ রাজনীতিতে এককালে লক্ষ্মণকে একডাকে চিনতেন সকলে। তিন বারের সাংসদ তিনি, বিধায়কও হয়েছেন তিন বার। নন্দীগ্রামকাণ্ডের পর তাঁকে বহিষ্কার করে CPM. এর পর 'ভারত নির্মাণ পার্টি' নামে নিজের আলাদা দল গঠন করেন লক্ষ্মণ। পরে আবার BJP-র হাত ধরেন। সেখানে হালে পানি না পেয়ে গিয়ে ওঠেন কংগ্রেসে।


গত লোকসভা নির্বাচনে হাত চিহ্নে তমলুক থেকে নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন লক্ষ্মণ। কিন্তু জামানত বাজেয়াপ্ত হয় তাঁর। তার পর বেশ কিছু দিন চুপচাপ ছিলেন। শোনা যায়, মাঝে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে চিঠিও লেখেন লক্ষ্মণ। তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু মমতার তরফে সে ভাবে সাড়া পাননি। এর পর এ রাজ্যে আম আদমি পার্টির হাত ধরারও চেষ্টা করেন। কিন্তু সদুত্তর পাননি সেখান থেকেও। তার পর থেকে আর সে ভাবে খবরে ছিলেন না লক্ষ্মণ। এতদিন পর দ্বিতীয় বিবাহে দৌলতে ফের খবরে উঠে এলেন তিনি।