কলকাতা : হতাশ হোয়ো না। ভেঙে পোড়ো না। ঘুরে দাঁড়াও। সময় পালটাবেই। এ কথা উমার। এন উমা হারাথি। সদ্য প্রকাশিত UPSC সিভিল সার্ভিসের যে ফল প্রকাশিত হয়েছে, তার সেরা শীর্ষ চার কন্যার এক জন। এবার সফলদের তালিকায় উমা রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। জেলা পুলিশ কর্তার মেয়ের ফল বার্তা দিচ্ছে আরও একটি। একবার অকৃতকার্য হওয়া মানেই সব শেষ নয়। লক্ষ্যে স্থির থাকলে স্বপ্ন ধরা দেবেই। উমা পাঁচবারের চেষ্টায় সফল হয়েছেন। আর একেবারে গোটা দেশে অধিকার করেছেন তৃতীয় স্থান।
উমা হারাথি তেলাঙ্গানার মেয়ে। বাবা নারায়ণপেট জেলার পুলিশ সুপার। এন বেঙ্কটেশ্বরালু। মেয়ে যাবতীয় সাফল্যের কৃতিত্ব দিচ্ছেন বাবাকেই। বলছেন, ছেলে হোক বা মেয়ে। স্বপ্ন পূরণে পরিবার, পরিবারের সমর্থনটা খুবই জরুরি। এই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী পারিবারিক সমর্থন। যা তিনি পেয়েছেন। তথ্য, বইপত্র তো অনলাইনে মেলে, কিন্তু আবেগের সঙ্গ দিতে পরিবারকে দরকার। তা অনলাইনে মেলে না। খুব গুরুত্বপূর্ণ যা। পাশাপাশি, জীবনসংগ্রামে হেরে গিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার মতো চরম পথ বেছে নেন যাঁরা, তাঁদের অনুপ্রেরণা জোগাবে উমার কথা। উমার কাজ। উমা বলেন, কমবয়সীদের হতাশ হয়ে ভেঙে পড়া উচিত নয়। নিজের উদাহরণ দেন তিনি। বলেন, নিজের সিভিল সার্ভিস প্রস্তুতি চলাকালীন অনেক ব্যর্থতা দেখেছেন।
শান্তিতে, স্বস্তিতে স্বপ্নপূরণের প্রস্তুতির কথা বলছেন উমা। পরীক্ষা পদ্ধতি ঠিকমতো জেনে আর একাগ্রতা পাথেয় করে লক্ষ্যের দিকে এগোলে যে কেউ UPSC-তে সফল হতে পারে।
ক্লাস থ্রি থেকে ক্লাস টেন। হায়দরাবাদের ভারতীয় বিদ্যা ভবনে পড়েছেন উমা হারাথি। পরে ইন্টারমিডিয়েট পড়েন ব্রিজ কলেজে। সেখানে রাজ্যস্তরের মেধা তালিকাতেও ছিল তাঁর নাম। পরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চলে যান IIT। একইসঙ্গে চলতে থাকে সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতিও। পরীক্ষায় বসেন, ব্যর্থ হন। প্রতিবারই নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন। আর ঘুরে দাঁড়িয়েছেন নতুন করে। উমার কথায়, ফেল তো হতেই পারে, নিজের উপর আস্থা থাকলে আশাহত হওয়ার কথা নয়। এক-আধবার নয়। চারবার পরীক্ষায় বসেও কিছু করতে পারেননি উমা। পাঁচবারের বার দেশের সফলদের তালিকায় একেবারে প্রথমের দিকে তুলে ফেলেন নিজের নাম।
নিজের সাফল্যের কোন ফরমুলা ভবিষ্যৎ প্রত্যাশীদের জন্য শেয়ার করছেন উমা ? অনুশীলন। উমার কথায়, যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকুই পড়াশোনা আর অসংখ্যবার অনুশীলন। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা তাই অনুশীলনও হতে হবে সেই মাত্রায়। একইসঙ্গে তৈরি করতে হবে নিজের স্ট্র্যাটেজিও।
মেয়ের সাফল্য গর্বিত পুলিশকর্তা বাবাও। মেয়ের দশবছরের পরিকল্পিত পরিশ্রমের ফসল এই ফল, বলছেন তিনি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতের সিভিল সার্ভিস প্রত্যাশীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পরামর্শ দিয়েছেন। নিষেধ করেছেন সময় নষ্ট করতে।
২০২২ সালের UPSC-তে সফল হয়েছেন মোট ৯৩৩ জন প্রার্থী। ৬১৩ জন পুরুষ এবং ৩২০ জন মহিলা। শীর্ষ পঁচিশজনে রয়েছেন চোদ্দ জন মহিলা, এগারো জন পুরুষ। আর প্রথম চারটি স্থানই মেয়েদের দখলে।
আরও পড়ুন : দিনমজুরি করেছেন স্কুলের ফাঁকে, সিভিল সার্ভিস আটবারের চেষ্টায় ; অনুপ্রেরণার নাম রাম ভজন
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI