সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ: সাধারণ মানুষের বায়োমেট্রিক তথ্য জাল করে অ্যাকাউন্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। কীভাবে গোপন তথ্য পৌঁছচ্ছে প্রতারকদের হাতে? এবার প্রতারণার শিকার উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) রায়গঞ্জের (Raiganj) এক যুবক। অভিযোগ, তাঁর আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক হ্যাক করে অ্যাকাউন্ট থেকে দু -দফায় তুলে নেওয়া হয় টাকা।
রায়গঞ্জ (Raiganj) শহরের দেবী নগরের বাসিন্দা অমিত কর্মকার। পেশায় বেসকারি সংস্থার কর্মী। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ২ দফায় ২০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তার অভিযোগ আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক হ্যাক করেই এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ জানান।
উত্তর দিনাজপুরে আরও প্রতারণা: এর আগেও উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় একই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। সম্প্রতি গোটা দেশজুড়েই একের পর এক আধার-প্রতারণার অভিযোগ উঠছে। পুলিশের দাবি, মূলত জমি রেজিস্ট্রি অফিস ও গ্রামের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাস্টমার সার্ভিস বিভাগ থেকে আধার কার্ডের ফিঙ্গার প্রিন্ট জোগাড় করছে প্রতারকরা। সেগুলি জাল করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। গোটা অপারেশন একেবারে নিঃশব্দে হচ্ছে এবং মূল টার্গেট প্রত্যন্ত গ্রামের গ্রাহকরা। সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে এক নাবালক-সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে উদ্ধার হয় প্রচুর মনিটর, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার মেশিন, ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ-সহ বেশ কিছু সরঞ্জাম। পুলিশের দাবি, চোপড়াজুড়ে প্রতারকরা জাল বিছিয়েছে। সেখান থেকেই প্রতারণার কারবার চলছে। আধার-প্রতারণার শিকার হয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান, শিক্ষক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ। প্রত্যেকেই আতঙ্কিত।
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সরকারি ওয়েবসাইট: আধার-প্রতারণায় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইট। পুলিশের দাবি, সেখান থেকেই বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করছে প্রতারকরা। ওয়েবসাইটে গেলে মিলছে আধারের তথ্য ও আঙুলের ছাপ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওয়েবসাইটে জমি রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত তথ্য সরকার একটি সংস্থাকে দিয়ে আপলোড করায়। পাবলিক ডোমেনে এই সমস্ত তথ্য যাতে গোপন থাকে, তার জন্য আধার-তথ্যে ‘মাস্ক’ পরাতে রাজ্যের অর্থ সচিবকে চিঠি দিয়েছে লালবাজার। আশঙ্কা বাড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুর থেকে ব্যাঙ্কের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টের মালিক গ্রেফতার হওয়ায়। বিভিন্ন গ্রামে গ্রাহকদের সুবিধার্থে এই সমস্ত কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট খোলা হয়েছে। যেখানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট ও অল্প অঙ্কের টাকা তোলা যায়। এবার প্রতারকরা সেখানেই ফাঁদ পাতায় চিন্তা বেড়েছে পুলিশের।
আরও পড়ুন: Recruitment Scam: নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্তে ইডির আধিকারিক বদল, নির্দেশ বিচারপতির