সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা: খাস কলকাতা থেকে জেলা, কালীপুজোর আগে দিকে দিকে চাঁদার জুলুম। এই পরিস্থিতিতে রাস্তায় বাস বা ট্রাক নামাতেই ভয় পাচ্ছেন মালিকরা। কেউ আবার অভিযোগ করছেন, চাঁদার নামে দৌরাত্ম্য বাড়লেও অনেক ক্ষেত্রেই কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না প্রশাসনের তরফে। এই প্রেক্ষাপটে পুলিশ কর্মীদের একাংশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা জবাব এসেছে তৃণমূলের তরফে।
কলকাতা থেকে কাটোয়া, দিকে দিকে সামনে আসছে চাঁদার জুলুমের অভিযোগ। কোথাও গাড়ি আটকে জবরদস্তি আদায় করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। আবার কোথাও তৎক্ষণাৎ চাঁদা না মেলায় করা হচ্ছে মারধর। এমনকী এই ভয়ঙ্কর দৌরাত্ম্যের হাত থেকে রেহাই পাননি বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা, পেশায় সেনাকর্মীও! চাওয়া মাত্রই চাঁদা না পাওয়ায়, স্ত্রী ও শিশুসন্তানের সামনেই তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারা হয় কিল, চড়, লাথি, ঘুষি!
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, কালীপুজোকে কেন্দ্র করে চাঁদার জুলুমবাজিতে আতঙ্কিত বাস চালক থেকে ট্রাক চালক। এনিয়ে পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি, বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, 'কলকাতা-সহ রাজ্যে আমাদের যে বাসগুলো চলে, আমরা খুব আতঙ্কিত থাকি দেওয়ালির সময়, কালীপুজোর সময়। রাস্তায় চলন্ত বাসকে দাঁড় করিয়ে যেভাবে চাঁদার জুলুম হয়, ভাবা যায় না। পুলিশের ভূমিকা তো মানুষ দেখতে পাচ্ছে। এই চাঁদার জুলুমের জন্য অনেকে গাড়ি চালাতে চায় না।'
কেউ আবার প্রশ্ন তুলছেন, চাঁদার নামে দৌরাত্ম্য বাড়লেও প্রশাসনিক পদক্ষেপ কোথায়? ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষ বলছেন, 'কালীপুজো-সহ জগদ্ধাত্রী পুজো, এই পুজোর চাঁদা,সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এই পুজোর চাঁদার জুলুম চলছে ট্রাক মালিকদের ওপর। অন্য রাজ্য থেকেও যেসমস্ত ট্রাক আসছে, তারাও এই চাঁদার জুলুমে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।'
কিন্তু কেন বারবার একই ঘটনা? কী করছে পুলিশ-প্রশাসন? বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, 'পুলিশই চাঁদা তুলছে তো। সবচেয়ে বেশি চাঁদা তো পুলিশ তুলছে। রক্ষক যদি ভক্ষক হয়, শাসক যদি শোষক হয়, তাহলে আপনি যাবেন কোথায়?' কোন পথে বন্ধ হবে চাঁদার জুলুমবাজি? কালী পুজোয় এইভাবে চাঁদা দাওয়া আদৌ কি সমীচিন? এই প্রশ্নের জবাব কিন্তু এখনও অধরা।