আশাবুল হোসেন, কলকাতা : ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পর্ষদের (Furfura Shariff Develpoment Trust) চেয়ারম্যানের পদে বসানো হল তৃণমূল বিধায়ক তপন দাশগুপ্তকে। গত বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত যে দায়িত্ব সামলেছিলেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তিনি পদ ছেড়ে দেওয়ার পর এতদিন যে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন হুগলির জেলাশাসক। এবার সেখানে বসানো হল হুগলির তৃণমূল নেতা তপন দাশগুপ্তকে। ফুরফুরা শরিফের উন্নয়ন নিয়ে পীরজাদাদের সঙ্গে দ্রুতই বৈঠক করবেন তিনি। যে বৈঠকে ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পর্ষদের আগের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমেরও তাঁর সঙ্গে থাকার কথা। তবে জেলাশাসকের পরিবর্তে তৃণমূল নেতাকে দায়িত্বে আনার রদবদলকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


ফুরফুরা শরিফের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনাতেই যে কাজ হয়েছিল। সেই কাজ যাতে ত্বরাণিত হয় তাই এই বদল বলে জানানো হলেও রাজ্যের রাজনৈতিক মহল মনে করছে অন্য কথা। তাঁদের বেশিরভাগেরই ভাবনায় সদ্য হয়ে যাওয়া সাগরদিঘি উপনির্বাচনের (Sagardighi By Elelction) ফলাফলে তৃণমূলের সংখ্যালঘু অস্বস্তি সামনে আসার পর থেকেই বাড়তি উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব।


মন্ত্রিসভার বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি সতীর্থদের থেকে জানতে চেয়েছিলেন সংখ্যালঘুরা কি সত্যিই তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাচ্ছে ? যদি তেমনটা হয়ে থাকে, তাহলে তা কেন হচ্ছে খুঁজে বের করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। দুই সংখ্যালঘু নেতা-নেত্রীকে যে দায়িত্বও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মন্ত্রিসভার সদস্যদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, রাজ্যে সংখ্যালঘুদের জন্য রাজ্য সরকারের যে এত জনমোহিনী প্রকল্প সে সম্পর্কে কি তারা সকলে অবগত ? বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা কি তাঁরা পাচ্ছেন ? সেই খোঁজ নেওয়া শুরু করার বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, সাগরদিঘিতে ভোটারদের এক বড় অংশ সংখ্যালঘু। যেখানে গত একদশক আসন দখল করে রাখলেও উপনির্বাচনে তা হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC)। যে হার থেকে শিক্ষা নিয়ে সংখ্যালঘুদের ক্ষোভের কারণ পঞ্চায়েত ভোটের আগে বুঝে তা প্রশমনেরই পন্থা নিয়ে পথচলা শুরু করেছে ঘাসফুল শিবির।


এদিকে, সংখ্যালঘুদের মধ্যে আরও ভালভাবে বললে ফুরফুরা শরিফের সঙ্গে সংখ্যালঘুদের কাছে পীরজাদা নৌশাদ সিদ্দিকির গ্রেফতারি ও দীর্ঘদিন তাঁর জেলে আটকে থাকা নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে বলেও মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ। তাঁদের ক্ষোভ ঠিক কোন কোন কারণে, তাঁদের বক্তব্য জানতে ও উন্নয়নের কাজ ভালভাবে চালাতেই ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে পদ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 


আরও পড়ুন- সরকারি কর্মীদের ডিএ-ধর্নামঞ্চে কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী, ধর্মঘট সমর্থনের বার্তা