বিশ্বজিৎ দাস, খড়্গপুর: গণেশ চতুর্থীতে অভিনব দৃশ্য পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে। ২১১ কেজির লাড্ডু দিয়ে গণেশের আরাধনা করলেন খড়্গপুরের খড়িদা অঞ্চলের সাইন স্টার ক্লাবের সদস্যরা। এই ক্লাবের সদস্যরা জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের গণপতির আদলে এখানে গণেশ পুজো হচ্ছে। ১০ বছর আগে ১০০ কেজির লাড্ডু দিয়ে পুজো শুরু হয়। এবার ১১-তম বছরের পুজো হচ্ছে। এবার লাড্ডুর ওজন বেড়ে ২১১ কেজি হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে এই পুজো উদ্বোধন করেন খড়গপুর পুরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকার। ৬ দিন ধরে চলবে এই পুজো। ২১১ কেজি লাড্ডু নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হলেও, গণেশ পুজোতেও লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপির অভিযোগ, পুর প্রশাসক মাস্ক না পরেই পুজো উদ্বোধন করেন। তিনি করোনাবিধি লঙ্ঘন করেছেন। এর ফলে সমাজে ভুল বার্তা যাবে। খড়্গপুরের পুর প্রশাসক অবশ্য করোনাবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সাইন স্টার ক্লাবের সম্পাদক সৌরভ গুপ্ত জানিয়েছেন, ‘মুম্বইয়ের আদলে গণেশ ঠাকুর এবং ২১১ কেজির লাড্ডুর ব্যবস্থা করেছি আমরা। ১০ বছর আগে ১০০ কেজির লাড্ডু থেকে আমরা পুজো শুরু করেছিলাম। এবার আমরা ২১১ কিলোর লাড্ডুর ব্যবস্থা করেছি। আগামী দিনে আরও বড় আকারে লাড্ডু হবে। মাস্ক পরে করোনাবিধি মেনেই সবকিছু হচ্ছে।’
পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করে খড়্গপুর পুরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকার বলেন, ‘আজ ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ২১১ কেজির লাড্ডু দিয়ে গণেশ পুজো উদ্বোধনে আমি এসেছিলাম। সারা বাংলায় ২১১ কেজির লাড্ডু দিয়ে আর কোনও গণেশ পুজো হয়নি। এটা একমাত্র খড়গপুর শহরেই হয়েছে। প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, করোনাবিধি পালন করতে হবে। প্রতিটি মানুষকে সচেতন থাকতে বলা হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, মানুষ সচেতন আছে। খড়্গপুরে করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা আশা করব, সচেতনতা ও সাবধানতা রেখেই পুজোর বাকিদিনগুলি কাটাতে পারবেন সবাই। সেই জন্য আমি পুজো কমিটিগুলিকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করব। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বদা সচেতনতার প্রচার করব। যাতে করোনাবিধি মেনে পুজো চলে।’
খড়্গপুর শহর বিজেপি মন্ডল সভাপতি শ্রী রাওয়ের অবশ্য দাবি, ‘সারা বিশ্বে করোনা অতিমারী ছড়িয়ে আছে। কিন্তু এখানে কোনও বিধিই মানা হচ্ছে না। এখানে করোনা সংক্রমণ বাড়ানো হচ্ছে। সরকারের এদিকে দেখা দরকার। করোনা অতিমারীর তৃতীয় ঢেউ থেকে মানুষকে বাঁচানো দরকার। করোনাবিধি মানার দরকার আছে। প্রশাসক নিজেই মাস্ক না পরে ঘুরছেন এবং অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করছেন। ওখানে অনেক ভিড় ছিল। এখন দূরত্ববিধি মেনে চলা দরকার। সবার মাস্ক পরে থাকা দরকার। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার, প্রশাসক নিজেই মাস্ক পরেননি। এতে সমাজের কাছে ভুল বার্তা যাবে। এ ব্যাপারে আমরা চিন্তিত।’