কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela 2021) নজরদারি কমিটিতে বিশেষজ্ঞর বদলে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) কেন, তা নিয়ে এ বার কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) প্রশ্ন তুলল রাজ্য সরকারও।  নবান্নের (nabanna) অভিযোগ, বিরোধী দলনেতাকে ওই কমিটিতে সামিল করায়, মেলায় রাজনৈতিক রং লেগেছে। বরং ওই কমিটি থেকে শুভেন্দুকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। এমনকি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নামও সুপারিশ করেছে রাজ্য।  সোমবার আদালতে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। তবে আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে রায়দান।


কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলায় অনুমতি দিলেও, সামাজিক দূরত্ববিধি, জমায়েত না করার মতো শর্ত বেঁধে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। কোথাও কোনও ভুলচুক চোখে পড়লে মেলা বাতিল করা হতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছে। তার জন্য তিন সদস্যের কমিটিকে নজরদারির দায়িত্ব সঁপেছে আদালত। কিন্তু ওই কমিটিতে বিজেপি-র বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে রাখা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। 


সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সোমবার আদালতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে নবান্নের তরফেও পৃথক আবেদন জমা দেওয়া হয়। তাতে রাজ্য জানায়, শুভেন্দু এক জন আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক মানুষ। বিরোধী দলনেতা তিনি। তাই গঙ্গাসাগর মেলার নিরপেক্ষ কমিটিতে তাঁকে কোনও ভাবেই রাখা উচিত নয়। কারণ তাতে গঙ্গাসাগর মেলায় রাজনীতির রং লাগবে। অযথা রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করা হবে এবং কমিটির আশ্রয় নিয়ে কিছু মানুষ রাজনৈতিক ফায়দা তুলবেন। তাই এই কমিটিতে শুভেন্দুর অন্তর্ভুক্তি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেয় রাজ্য।


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: নেতাই, কাঁথিতে শুভেন্দুর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগ, রাজ্যের রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের


শুভেন্দুর অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করে আরও একাধিক আবেদন জমা পড়ে আদালতে। তাতে রাজ্য সরকারের নেতা-মন্ত্রী-আমলা থেকে বিরোধী শিবিরের নেতা, কাউকেই কমিটিতে রাখা উচিত নয় বলে দাবি করা হয়। এমনকি রাজ্যে যেখানে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ খালি, সেখানে আদালতের গড়ে দেওয়া কমিটির পূর্ণতা পাওয়াই সম্ভব নয় বলে অভিযোগ করা হয়। একই সঙ্গে বলা হয়, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হোন বা রাজ্যের কোনও আমলা বা নেতা-মন্ত্রী, এঁরা কেই অতিমারি বিশেষজ্ঞ বা বা পরিসংখ্যানবিদ নন। একমাত্র বিশেষজ্ঞ এবং পরিসংখ্যানবিদরাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। তাই কমিটিতে তাঁদেরই জায়গা দেওয়া হোক বলে আদালতে যুক্তি দেওয়া হয়। 


রাজ্য় এবং অন্যান্য আবেদনকারীদের তরফে এখনও পর্যন্ত আদালতে যাঁদের নাম কমিটির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকার, অভিজিৎ চৌধুরী, সুকুমার মুখোপাধ্যায়, মানস গুপ্ত এবং সুবর্ণ গোস্বামী। এ ছাড়াও, হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকেও কমিটিতে রাখার পক্ষে সওয়াল করা হয় আদালতে। 


তবে ডক্ট্রস ফোরাম মেলার তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, পুণ্যার্থীদের অনেকেই বিধি মানছেন না। ফলে গঙ্গাসাগর সুপারস্প্রেডার হয়ে উঠতে পারে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালতেরই মেলা বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে দাবি তোলে ওই সংগঠন।