পার্থপ্রতিম ঘোষ, অণির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : ভয়াবহ এক রবিবারের সাক্ষী থাকল কলকাতার গার্ডেনরিচ ( Garden Reach )। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল গার্ডেনরিচে বেআইনিভআবে নির্মীয়মাণ ( Garden Reach Building Collapse )  এক বহুতল। বেঘোরে গেল ৯ টি প্রাণ। মৃত্যুমিছিল এখানেই শেষ, এমনটা এখনও বলা যাচ্ছে না। কারণ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে কারও থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুরমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রেই নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯। ধৃত প্রোমোটারের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। ৫ তলার ওপরে গাঁথনি করতে গিয়ে দুর্ঘটনা, দাবি করেছেন ধৃত প্রোমোটার। কিন্তু বিপদের এখানেই শেষ নয়। কারণ জানা গিয়েছে, সেদিনের দুর্ঘটনার অভিঘাতে রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত আMsপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি। 


জানা গিয়েছে, গার্ডেনরিচের দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই হেলে থাকা ৬টি বাড়িকে চিহ্নিত করেছে পুরসভা। যার মধ্য়ে ৫টি বাড়ির কোনও বিল্ডিং পারমিটই নেই। নোটিস পাঠিয়ে সেই বাড়ির মালিকদের শুনানিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। হেলে পড়া বাড়িগুলি কলকাতা পুরসভার স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়াররা সরেজমিনে দেখে রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে, গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর শহরে অবৈধ নির্মাণ খুঁজতে তৎপর হয়েছে কলকাতা পুরসভা। মঙ্গলবার সকাল থেকে সমস্ত ওয়ার্ডে অবৈধ নির্মাণের খোঁজে তল্লাশিতে নামছেন কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্তারা। 


অন্যদিকে এখন তৎপর হয়েছে কলকাতা পুলিশও । গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর কলকাতা পুরসভার পাশাপাশি বেআইনি নির্মাণ খুঁজতে তৎপর হয়েছে কলকাতা পুলিশও। নিজের নিজের এলাকায় নজরদারি চালাতে সমস্ত ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার ও সব থানাকে নির্দেশ দিল লালবাজার। বেআইনি নির্মাণ নজরে এলে তৎক্ষণাৎ উপযুক্ত ব্য়বস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের এলাকায় জীর্ণ ও বিপজ্জনক বাড়ি বা বিল্ডিং থাকলে সে বিষয়ে কলকাতা পুরসভাকে জানাতে সমস্ত ডিসি ও সব থানাকে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।   


সোমবার দিনের আলো ফুটতেই দেখা যায়, শুধু এই একটিমাত্র বহুতলই নয়, সংকীর্ণ, ঘিঞ্জি রাস্তার ধারে গড়ে ওঠা একাধিক বহুতলই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলা জমি বুজিয়ে এতদিন রমরমিয়ে চলছিল বেআইনি নির্মাণের ব্যাবসা। আর প্রতিবাদের উপায়ও ছিল না। কারণ? স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, 'কোনও অপশন নেই। এখানে কাউকে এখন অভিযোগ করতে গেলে, সে এক্ষুনি এসে আমার ঘরেতে এসে, আমাকে গুলি মেরে চলে যাবে। ' 

এই পরিস্থিতিতে কী এবার কড়া  হবে পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভা ? নাকি এভাবেই পচা সুতোয় ঝুলতে থাকবে শয়ে শয়ে মানুষের জীবন ? প্রশ্নটা উঠছেই ।