পার্থপ্রতিম ঘোষ, নরেন্দ্রপুর : গড়িয়ায় একই পরিবারের তিন জনের পচা-গলা দেহ উদ্ধার। গড়িয়া স্টেশনের কাছে একটি ফ্ল্যাট থেকে দেহগুলি উদ্ধার করা হয়। ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় স্বামী-স্ত্রী ও ছেলের দেহ। দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরাই প্রথমে পুলিশে খবর দেন। পরে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে দেহগুলি উদ্ধার করে।
পাশের ফ্ল্যাটের এক মহিলা বলেন, "এক জন বয়স্ক মানুষ , তাঁর স্ত্রী এবং কমবয়সি ছেলে থাকতেন। আমার বাড়ি গঙ্গাসাগর। শনিবার আমি এখানে এসেছি। তখন থেকেই দরজাটা বন্ধ। গত পরশু থেকে গন্ধটা পাওয়া যাচ্ছে। উপরে যাওয়ার জন্য জুতো নিতে এসে গন্ধ পাই। মনে করেছিলাম, ইদুঁর মরেছে বোধ হয়। এত গন্ধ। তার পরে আমার মেয়েও বলছে কোথা থেকে গন্ধটা আসছে ! আমরা শনিবার থেকে এসেই ওঁদের দেখতে পাইনি।"
জানা গেছে, এটি মৈত্র পরিবার। স্বামী, স্ত্রী ও বছর ৩৫-৪০-এর ছেলে তাঁদের। দরজার লক ভেঙে ভেতরে ঢোকে পুলিশ। দরজা যেহেতু ভেতর থেকে বন্ধ ছিল তাই প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, এরা তিন জন আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। তবে, কেন এই ঘটনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, অনেক দিন আগেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
গত বছর নভেম্বর মাসেই আনন্দপুরে নোনাডাঙার বাল্মিকী আবাসন থেকে বৃদ্ধ দম্পতির দেহ (Couple Body Recovery In Anandapur) উদ্ধার ঘিরে রহস্য দানা বাঁধে। পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া যায়, স্ত্রীকে গলা কেটে নৃশংসভাবে খুন করে আত্মঘাতী হন বৃদ্ধ। শারীরিক অসুস্থতার ফলে দু'জনেই অবসাদে ভুগতেন বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করে।
আনন্দপুর থানায় খবর যায়, বাল্মিকী আবাসনের ছাদ থেকে এক ব্য়ক্তি পড়ে গিয়েছেন। পরবর্তী কালে জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম অমূল্য সমাদ্দার। তাঁর ৭৩ বছর বয়স। প্রাথমিক তদন্তে আরও উঠে আসে, ওই বৃদ্ধ ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করার পর অমূল্য সমাদ্দারের বাড়ি গেলে পুলিশ দেখতে পায়, এক বৃদ্ধা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। পরে জানা যায়, বৃদ্ধার নাম গীতা সমাদ্দার। ৬৩ বছরের গীতা, মৃত বৃদ্ধের স্ত্রী। পুলিশ জানায়, ছুরি দিয়ে গলা কাটা ছিল বৃদ্ধার। তদন্তে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, বৃদ্ধই ছুরি দিয়ে বৃদ্ধার গলা কাটেন। তার পর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বলে দাবি করে পুলিশ। গত ১০ বছর ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন গীতা। অমূল্যই তাঁর দেখভাল করতেন। চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন তিনি অমূল্য। ডাক্তার জানান, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা হয়েছে বৃদ্ধের। হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। তারপরই অনুমান করা হয়, অবসাদ চেপে বসে। স্ত্রী এবং তাঁর দেখভাল কে করবেন, সেই চিন্তায় পড়ে যান অমূল্য। সম্ভবত সেখান থেকেই 'খুন' ও 'আত্মহত্যা'। বৃদ্ধের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ।