রাজীব চৌধুরী, সামশেরগঞ্জ ও ফরাক্কা : ফের ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের। মিজোরামের (Mizoram) পর এবার গাজিয়াবাদে (Gaziabad) বাংলার ৩ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর (Migrant Labourers Deatg) খবর সামনে এসেছে। গাজিয়াবাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু মুর্শিদাবাদের ৩ পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃতদের মধ্যে ২জনের বাড়ি সামশেরগঞ্জে এবং একজনের বাড়ি ফরাক্কায়। একসঙ্গে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়েছিলেন তাঁরা।


মিজোরামে রেল ব্রিজ বিপর্যয়-


এক কথায় ভয়ঙ্কর ! চোখের সামনেই ভেঙে পড়ে আস্ত একটা নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ। বুধবার সকালে মিজোরামের আইজল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে, সাইরাং এলাকায়, আচমকা ভেঙে পড়ে একটি নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় মালদার ২৩ জন শ্রমিকের। তার মধ্যে রতুয়ার চৌদুয়ার গ্রামেরই ১১ জন রয়েছেন। শুক্রবার এসেছিল ১৮ জনের মৃতদেহ। শনিবার মৃত আরও চার শ্রমিকের দেহ পৌঁছল দুই গ্রামে।  


মালদার চৌদুয়ার গ্রাম কার্যত মৃত্যুপুরী ! পেটের টানে ভিনরাজ্যে গিয়েছিলেন ওঁরা ! কিন্তু মিজোরামে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ছারখার করে দিয়েছে পরিবারগুলোকে। বরাত জোরে আব্দুস সালাম প্রাণে বাঁচলেও, প্রাণ গিয়েছে এই গ্রামেরই বাসিন্দা ১৯ বছরের শাহিন আখতারের। এদিন তাঁর নিথর দেহ পৌঁছয় বাড়িতে। রতুয়ার চৌদুয়ার গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ সানাউল্লা বলছেন, "গ্রামের ২০০-র বেশি মানুষ ভিনরাজ্যে কাজ করে। আমিও যাই মাঝেমধ্যে। এখানে কাজ নেই। কী করব, সংসার চালাতে গেলে তো বাইরে যেতেই হবে। দেশের প্রান্তে এমনকি বিদেশেও কাজ করতে যায় এই গ্রামের মানুষ।"


রতুয়ার যে চৌদুয়ার গ্রামে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, ঠিক তার পাশের গ্রামই হল ইংরেজবাজারের নাগরাই। স্থানীয়দের দাবি, এই গ্রামে মোট ৮০০টি পরিবার রয়েছে। প্রায় প্রত্যেক পরিবারেরই দু-একজন করে সদস্য বর্তমানে ভিনরাজ্যে। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কেরল, গুজরাত, কর্ণাটক তো আছেই, পেটের টানে অনেকে গিয়েছেন রাজস্থান, মণিপুর, মিজোরামের মতো রাজ্যেও। 


মৃত ২৩ জন শ্রমিকের মধ্যে ২২ জনের মৃতদেহ ইতিমধ্যেই বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সূত্রের খবর, রবিবার বাকি অপর পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ ফিরবে গ্রামে।  


কিন্তু, বাংলায় কাজ নেই বলেই কি ভিনরাজ্যের দিকে পা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে ? সেইজন্যই কি বাংলায় পরিযায়ী শ্রমিকের বাড় বাড়ন্ত ? মিজোরামে নির্মীয়মাণ রেলসেতু ভেঙে মালদার ২৩ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শুরু তরজা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। পাল্টা উত্তর দিয়েছে শাসকদল।