সোমনাথ দাস, ঘাটাল: টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির জেরে ফের প্লাবন আতঙ্ক। বন্ধ যোগাযোগ ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চাষের জমিও। এই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের (Ghatal)। জল বাড়লে কী হবে তা ভেবেই আতঙ্কে স্থানীয়রা।


ফের প্লাবন আতঙ্ক ঘাটাল: ঝুমি নদীর জলে প্লাবিত ঘাটাল ব্লকের মনসুকা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম। পালপুকুর থেকে ঘোড়ই ঘাটে উঠল জল, বন্ধ গাড়ি চলাচল। হাঁটু সমান জলে সাইকেল কাঁধে নিয়ে ঝুঁকির পারাপার করছে স্থানীয়রা। বেশ কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগের একটিমাত্রা রাস্তা বলেই দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয়রা বলছেন, জল আরও বাড়লে নামাতে হবে নৌকা। ইতিমধ্যে কয়েকটি গ্রামে জল ঢোকায় ক্ষতি হয়েছে ফসলরেও। মনসুকা, পার্বতীচক, কোন্দরপোচক সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষি জমি জলের তলায়। ফসল নষ্ট দাম চড়ে বলেই আশঙ্কা সাধারণ মানুষের।


বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সুষ্পষ্ট নিম্নচাপ ধীরগতিতে এগিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটি এখন ঝাড়খণ্ড ছত্তীসগড় এলাকায় অবস্থান করছে। ছত্তীসগড় থেকে মধ্য মহারাষ্ট্র পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। এর টানে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে বঙ্গোপসাগর থেকে। আর তার জেরেই  দক্ষিণবঙ্গে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মেঘলা আকাশ থাকবে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, রাজ্যের পূর্ব দিকের জেলাগুলিতে আংশিক মেঘলা আকাশ হলেও পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টি চলবে আরও দুদিন। পশ্চিমবঙ্গের  উপকূলে ও পশ্চিমের দিকের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত  গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। মঙ্গলবার বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের  জেলাগুলিতে। ভারী বৃষ্টি হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বীরভূম জেলায়। বৃহস্পতিবারেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলায়।


তবে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরই নয়, প্লাবন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, অন্য জেলাতেও। নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে বাঁকুড়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাঁকুড়া শহর লাগোয়া ভাদুল সেতু দ্বারকেশ্বরের জলে ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ। সমস্যায় পড়েছেন আশপাশের প্রায় ৩৫টি গ্রামের মানুষ। মীনাপুর সেতুর ওপর দিয়েও বইছে দ্বারকেশ্বরের জল। যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ৮টি গ্রামের বাসিন্দারা। বাঁকুড়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গন্ধেশ্বরী নদীর জল বইছে মানকানালি সেতুর ওপর দিয়ে। আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় এই সেতুটিও ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


আরও পড়ুন: North 24 Parganas Weather: সকাল থেকেই মুখভার, দফায় দফায় বৃষ্টি উত্তর ২৪ পরগনায়