নয়াদিল্লি: খেতে সুস্বাদু হলেও, মাছের আঁশটে গন্ধ সহ্য হয় না অনেকেরই। তার জন্যই মাছ ছুঁয়ে দেখেন না তাঁরা। কিন্তু মাছের গায়ে এই আঁশটে গন্ধের উৎস কী, কী উপায়ে রান্না করলে তা নাকে পৌঁছবে না, জানেন কি? (Science News) জীব বিজ্ঞানীদের মতে, মাছের শরীরে থাকা প্রোটিন এবং ফ্যাট তাপমাত্রা এবং অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে জীবাণুঘটিত এবং রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া ঘটে। তার জেরেই আঁশটে গন্ধ বেরোতে শুরু করে। ছোট থেকে বড় হয় যত মাছ, ততই এর তীব্রতা বাড়তে থাকে। (Smell of Fish)


শুধু তাই নয়, পুকুরের টাটকা মাছের তুলনায় সামুদ্রিক মাছের শরীরের আঁশটে গন্ধের তীব্রতা হয় বেশি। লবণাক্ত জলের জন্যই এমনটা ঘটে বলে মত ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টের খাদ্য বিজ্ঞানের অধ্যাপক এরিক ডেকারের। আঁশটে গন্ধ যখন দুর্গন্ধের আকার ধারণ করে, মাছ খারাপ হয়ে গিয়েছে বলে বুঝতে হবে। মাছের শরীরে ব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি হলেই এমনটা ঘটে। মৎস্যজীবীদের জালে বন্দি হওয়ার পর থেকে সুপার মার্কেটে আসতে আসতে এই ব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি ঘটে। মাছের শরীরে থাকা ট্রাইথাইলামিন এন-অক্সাইড খেতে শুরু করে ওই ব্যকটিরিয়া। ঠান্ডা জলের মাছের ক্ষেত্রে এমনটা বেশি ঘটে। ব্যাকটিরিয়া ট্রাইথাইলামিন এন-অক্সাইডকে ট্রাইথাইলামিনে পরিণত করে, যা থেকে অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধের উৎপত্তি ঘটে।


আরও পড়ুন: Comet Nishimura: ছুটতে ছুটতে সূর্যের কাছে হাজির, এক ঝটকায় লেজ খোয়া গেল ধূমকেতু নিশিমুরার


এর পাশাপাশি, এনজাইমও মাছের আঁশটে গন্ধের জন্য দায়ী। মাছের শরীরে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড লাইসিনকে কাডাভারিনে পরিণত করে ব্যাকটিরিয়া, যা পচনশীল প্রাণীর শরীরেও পাওয়া যায়। তা থেকেও দুর্গন্ধ বের হয়। রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া থেকেও দুর্গন্ধ বের হয়। এক্ষেত্রে মাছের শরীরে থাকা ফ্যাট বা লিপিডস অক্সিডাইজড হলে এমনটা ঘটে। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে মাছের শরীরে পচন ধরে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু থেকেই দুর্গন্ধ বের হয়।


এই দুর্গন্ধ আটকাতে হলে, ফ্রিজে বা বরফ চাপা দিয়ে মাছ রাখা উচিত। এতে ব্যাকটিরিয়ায় বৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে যায়। শক্ত করে প্যাকেটে বা বাক্সে ভরে দিতে হয় মাছ, যাতে তা অক্সিজেনের সংস্পর্শে না আসে। মাছের আঁশটে গন্ধ যাতে থেকে না যায়, রান্নার সময় তাই জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে লেবু, ভিনিগার বা টমেটোর রস লাগিয়ে নেন অনেকে। ফলে গন্ধ নাকে এসে পৌঁছয় না।