প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: এবিপি আনন্দে মুখ খুললেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের (recruitment scam) অন্যতম 'সাক্ষী' গোপাল দলপতি (gopal dalapati)। মিথ্যে বলছেন যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ (kuntal ghosh), এবিপি আনন্দে বিস্ফোরক দাবি গোপালের। সঙ্গে আর কী?


বিস্ফোরক গোপাল...
তাপস মণ্ডল ঘনিষ্ঠের দাবি, 'টাকার বিনিময়ে আগেও চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন কুন্তল। প্রার্থীপিছু ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন।' তাঁর কথায়, 'কালীঘাটে কাকুর কাছে টাকা পাঠাতে হবে, বারবার বলতেন কুন্তল ঘোষ।' কিন্তু কে এই কালীঘাটের কাকু? জানেন না বলে এবিপি আনন্দকে জানিয়েছেন গোপাল। তাঁর দাবি, বেআইনি নিয়োগের জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১৫ কোটি টাকা দেননি। তবে কুন্তলের থেকে যে হাতখরচ বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন সেটা মেনে নিয়েছেন। 
আরও জানালেন, তাপস মণ্ডলই কুন্তলের কাছে নিয়ে যান। বললেন, 'নিয়োগের জন্য তাপস মণ্ডলের চাকরিপ্রার্থীদের ৯৪ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় কুন্তলকে।' তাঁর হিসেব মতো, ১০০ কোটির বেশি দুর্নীতি হয়েছে। কুন্তল হালে যা বলছেন, সবটাই মিথ্যে সে কথাও জোর গলায় জানিয়েছেন তিনি। গোপালের অভিযোগ, তদন্ত বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছেন কুন্তল। প্রসঙ্গত, চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতারির পর নাম বদলেছিলেন গোপাল। আরমান গঙ্গোপাধ্যায় নামে যাবতীয় নথিও তৈরি করেন। 


কী অবস্থায় কুন্তল...
এদিকে দিনদুয়েক আগেই ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের জেল হেফাজত দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে তাঁকে জেরার জন্য ইডি যে আবেদন জানিয়েছিল, তাতেও সম্মতি জানায় আদালত। খারিজ হয় জামিনের আবেদন। যদিও কুন্তলের দাবি ছিল, 'বিজেপির সঙ্গে মিলে চক্রান্ত করছে তাপস মণ্ডল।' বিষয়টি নিয়ে তিনি যে আদালতেই সব জানাবেন, সে কথাও খোলাখুলি বলেন যুব তৃণমূল নেতা। ইডির দাবি, এখনও পর্যন্ত তাঁর ২টি অ্যাকাউন্টে সাড়ে ৬ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। আপাতত যা জানা যাচ্ছে, তাতে ৩০ কোটি টাকা নিয়েছেন কুন্তল। দাবি তদন্তকারীদের। এর স্বপক্ষে প্রমাণও রয়েছে, বলছেন তাঁরা। আরও জানা গিয়েছে. কখনও সরাসরি, কখনও প্রভাবশালীর মাধ্যমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে টাকা পৌঁছতেন কুন্তল ঘোষ। গত শুক্রবার নগর দায়রা আদালতে ধৃত যুব তৃণমূল নেতাকে পেশ করার সময়, রিমান্ড লেটার জমা দেয় ইডি। যার ১৬ নম্বর পয়েন্টে তারা দাবি করেছে, অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে কুন্তল ঘোষের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। যাঁরা অবৈধ প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দিতে যুব তৃণমূল নেতাকে সাহায্য করতেন। তার মধ্যেই এবিপি আনন্দে চাঞ্চল্যকর দাবি গোপাল দলপতির।  


আরও পড়ুন:'মামলা ঝুলে থাকলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে না' ফের CBI-র তদন্তে ক্ষোভপ্রকাশ বিচারপতি বসুর