সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (Party Inner Clash) নিয়ে এবার প্রকাশ্যে স্বীকারোক্তি তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির (Ajit Maity)। শুধু স্বীকারোক্তিই নয়, তিনি সামাল দিতে পারেননি বলেও প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করে দিলেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের সভা থেকে তিনি মানস ভুঁইয়াকে নজরদারি করতেও বলেন। একই সাথে এও হুঁশিয়ারি দেন,'আগামীদিনে ফেডারেশনের কোনও গ্রুপ বরদাস্ত করা হবে না।'
উল্লেখ্য, বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে (Manas Bhunia)। আর তার সামনেই এদিন অজিত বাবুকে তৃণমূলের সরকারী কর্মী সংগঠন নিয়ে এমন মন্তব্য করতে দেখা যায়।আর এই ঘটনাকেই এবার খোঁচা দিল বিজেপি (BJP)। বিজেপির দাবি, এতদিন আমরা দ্বন্দ্বের কথা বলতাম, তখন মানতো না। এখন নিজের মুখে স্বীকার করছেন। তাহলে দায় নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কালীঘাটে (Kalighat) পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিন। গত বছর বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও তীব্র আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি (Ajit Maity)। পাল্টা, অজিত মাইতির বিরুদ্ধে, জেলা পরিষদে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ রাজনীতিতে ফের কু’কথার ছড়াছড়ি। কখনও কখনও সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ব্যক্তিগত আক্রমণেরও। একদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি, মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক তথা, জেলার কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি। খড়গপুর আইআইটিতে এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় পচাগলা দেহ। ঘটনায় খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় সরাসরি বিজেপির দিকে আঙুল তোলেন অজিত মাইতি। পশ্চিম মেদিনীপুর তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর ও বিধায়ক অজিত মাইতি বলেন, ভারতবর্ষের ১১ নম্বর র্যাঙ্ক করা একটি ছাত্র খড়গপুর IIT’তে ভর্তি হয়েছে, সেই ছাত্রকে মেরে ফেলা হয়েছে। এটা ডিপ্রেশনের গল্প ফাঁদা হচ্ছে। কিন্তু জাস্ট ওঁকে খুন করা হয়েছে। আমার যেটা একশো ভাগ সন্দেহ, বিজেপির কোনও না কোনও স্তরের নেতা, এর সঙ্গে ইনভল্ভ আছে। তাঁর উত্তর দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'বোঝেও না IIT, IIT’র আশপাশেও যায় না। কাটমানি ছাড়া কিছু বোঝে না।'
আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রীকে সাম্মানিক ডি-লিট সেন্ট জেভিয়ার্সের
শুধু তা-ই নয়, তিনি আক্রমণ করে আরও বলেন, 'TMC’র এমন নেতা মেদিনীপুরে, আমাদের মেদিনীপুরের বদনাম হয়ে যাচ্ছে। অজিত মাইতির মত কিছু গাম্বাট এখানকার নেতা হয়েছে, দেখলেই চোর চোর মনে হয় চেহারা।' পাল্টা অজিত মাইতি বলেন, "বাংলায় যদি কুকথার জনক কেউ থাকে, তাঁর নাম দিলীপ ঘোষ। আসলে সবাই যত ওঁকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করে রাখুক, MP করে রাখুক, কিন্তু উনি যে অরিজিনালি খারাপ কথা বলার লোক, অশ্লীল কথা বলার লোক, উনি যে নিজে অসত্, এগুলো সব বেরিয়ে পড়ছে।' অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষ বলেন, এই মালটা কত টাকা নিয়েছে জেলা পরিষদে চাকরি দেবে বলে সেসব তথ্য আমার কাছে আছে। দরকার হলে তাঁকেও একবার ঢোকাব, কেষ্টর কাছে পাঠাব।'