সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : একদিকে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের দাবিতে লাগাতার চলছে আন্দোলন। কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে ধরা পড়ছেন নেতা থেকে এজেন্ট! অন্যদিকে, চাকরি বাঁচাতে আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটছেন চাকরিচ্যুতরা! 'Game is On', 'খেলা হবে' - গ্রুপ C মামলায় হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে এই ভাষাতেই সওয়াল করলেন চাকরিহারাদের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে গ্রুপ C পদে নিয়োগের জন্য় কাউন্সেলিং পর্ব। কিন্তু গ্রুপ C-র কাউন্সিলিংয়ে কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল না ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে গ্রুপ C পদে নিয়োগের জন্য় কাউন্সেলিং পর্ব। সেই কাউন্সেলিংয়ের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন, সম্প্রতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে চাকরিহারা গ্রুপ সি-র ৮৪২ জন অযোগ্য় চাকরিপ্রার্থী।
এদিন আদালতে চাকরিহারাদের আইনজীবীর সওয়ালে ব্যবহার হল 'গেম ইজ অন, খেলা হবে' এই কথাগুলি। পরে অবশ্য আদালতের পরামর্শে 'খেলা হবে' শব্দবন্ধ প্রত্যাহার করা হয়। আইনজীবীর প্রশ্ন, চকরিপ্রাপকরা স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ পত্র, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়োগপত্র এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের অনুমোদন নিয়ে কাজে যোগ দিয়েছিল। এই ৩ সংস্থার ভূমিকা কেন খতিয়ে দেখা হবে না? ' এসএসসি, মধ্য শিক্ষা পর্ষদ, জেলা স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেন মামলাকারীরা।
মূল্যায়নকারী সংস্থা এনওয়াইএসএ (NYSA)-র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীরা। তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশ সরকার NYSA-কে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। সিবিআই এই পরিপ্রেক্ষিতে বলে, 'আর্থিক দুর্নীতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, সময় লাগলেও, তাড়াতাড়ি মাথার সন্ধান মিলবে। বাজেয়াপ্ত করা ওএমআর বিকৃত, এরকম ভাবার কারণ নেই। ' এরপর স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায়, ' OMR শিট পরীক্ষা করে দেখার পরই সুপারিশ প্রত্য়াহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।'
নিয়োগপ্রক্রিয়া ফসিলে পরিণত হয়েছে, হাইকোর্টে মন্তব্য করেন চাকরিচ্যুতদের আইনজীবী। ' ফসিল না, মিশরীয় ফসিল, ' মন্তব্য করেন বিচারপতি। শুনানি আজকের মতো শেষ হয়েছে। স্থগিত রয়েছে রায়দান।
নিয়োগে বিস্তর অনিয়ম ধরা পড়ায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে, চাকরি হারিয়েছিলেন গ্রুপ সি-র ৮৪২ জন কর্মী।সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহেই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন চাকরিচ্যুতদের একাংশ! মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬-তে গ্রুপ সি-তে নিয়োগ পান ২ হাজার ৩৭ জন। তার মধ্যে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অর্থাৎ নিয়োগ পাওয়া ৪১ শতাংশ প্রার্থীর চাকরিই বাতিল করে দেয় আদালত! চাকরিচ্যুতদের মধ্যে ৫৭ জনের SSC-র কোনও সুপারিশপত্রও ছিল না!