পার্থপ্রতিম ঘোষ,  কলকাতা : কথায় বলে, চোরের মায়ের বড় গলা! কিন্তু, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যাঁদের নাম জড়িয়েছে... অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আদালতের নির্দেশে যাঁরা চাকরি খুইয়েছেন, এক এক করে সামনে আসছে তাঁদের কীর্তিকলাপ!


স্কুলের অশিক্ষক কর্মী! অথচ তাঁর দাপটে তটস্থ টিচার ইনচার্জ!


 প্রবীর নস্কর! দমদম সর্বোদয় বিদ্যাপীঠে গ্রুপ সি কর্মী হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন ছাঁটাইয়ের তালিকায় প্রবীরের নাম আছে ৪৪৮ নম্বরে! সেই প্রবীরের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনেছেন দমদম সর্বোদয় বিদ্যাপীঠের টিচার ইনচার্জ অমলকৃষ্ণ সর্দার। তিনি বললেন, ' আমাকে বলত, আমি দেখে নেব! কী করতে পারি!'  টিচার ইনচার্জ আরও জানালেন, ' নিজেকে অফিসিয়াল প্রধান মনে করত, যাবতীয় কাজ উনি করতেন, কোথাও অফিসিয়াল কাজে আমি যাব কি না যাব, সবটাই উনি দেখতেন ' যদিও এই বিষয়ে প্রবীর নস্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, উনি ফোন ধরেননি। জানা গিয়েছে, যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁরা নিজেদের কাজ সম্পর্কেই ওয়াকিবহাল ছিলেন না।


আরও পড়ুন : 


স্বামী প্রাক্তন TMCP নেতা, বাবা একসময়ের দাপুটে বাম নেতা, Group C র চাকরিহারাদের তালিকায় স্বর্ণালী


পাতিপুকুরেও এমন ঘটনা


পাতিপুকুর পল্লিশী বিদ্যাপীঠে গ্রুপ সি কর্মী হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন মৃণালকান্তি বিশ্বাস। ছাঁটাইয়ের তালিকায তাঁর নাম আছে ৩৮৯ নম্বরে। সেখানকার প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় ঘোষ জানালেন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের রেকমেন্ডশন লেটার ছিল, নিয়োগে দুর্নীতি পরে জানতে পারেন তিনি। শুক্রবারই আদালতের নির্দেশের দিন শেষবার স্কুলে এসেছিলেন মৃণাল। তারপর থেকে তাঁর আর দেখা নেই।


এভাবেই একে একে ঘুরপথে অশিক্ষক কর্মীদের নাম আর তাঁদের কীর্তিকলাপ ফাঁস হচ্ছে। ততই চোখ কপালে উঠছে শিক্ষা মহলের।


চাকরি গিয়েছে প্রাক্তন TMCP নেতার স্ত্রীরও !

আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুর হাইস্কুলের গ্রুপ সি কর্মী স্বর্ণালি 
মণ্ডলের। স্বর্ণালির স্বামী তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতা, বাবা সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য। গ্রুপ সি চাকরি-বাতিলের তালিকায় স্বর্ণালির নাম রয়েছে ৭৩২ নম্বরে। এসএসসি পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পেয়েছিল মেয়ে, জানিয়েছে স্বর্ণালির পরিবার। আদালতের নির্দেশ মানতে তারা বাধ্য বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।


আদালতের নির্দেশে বরখাস্ত হওয়া গ্রুপ সি  ( Group C ) কর্মীদের তালিকায় বহু তৃণমূল নেতা ( TMC )  যেমন আছেন, তেমনই শাসক দলের নেতা কর্মীদের আত্মীয়রাও রয়েছেন। মন্ত্রীর ভাই থেকে বিধায়কদের পুত্র-কন্যারা, কে নেই সেই তালিকায়।