উত্তর ২৪ পরগনা: ফের চাকরি-চুরিতে তৃণমূল যোগ। বিধায়ক-পুত্র, বিধায়কের ভাইয়ের পর এবার হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গেল উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর তৃণমূল বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলের মেয়ে বিনতা মণ্ডলের। বিনতা কামারহাটির নন্দননগর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের গ্রুপ সি কর্মী ছিলেন। চাকরি-হারাদের তালিকায় তৃণমূল বিধায়কের মেয়ের নাম রয়েছে ১৪১ নম্বরে। শুক্রবার তৃণমূলের হয়ে DA-ধর্মঘট-বিরোধিতায় স্কুলে গিয়েছিলেন বিধায়ক কন্যা। বিকেলে জানা যায়, তাঁর চাকরি গিয়েছে। গতকাল আর স্কুলে যাননি তৃণমূল বিধায়কের মেয়ে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে করণিক পদে যোগ দেন বিধায়ক-কন্যা। সেদিন বিধায়ক নিজেই মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন স্কুলে। এই নিয়ে বিধায়কের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কটাক্ষ করেছে বিজেপি। যদিও বিধায়কের স্বামী তথা মিনাখাঁ বিধানসভার তৃণমূল চেয়ারম্যানের দাবি, সুপারিশ নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছে মেয়ে।
চাকরি গিয়েছে বিজেপি নেতা দুলালচন্দ্র বরের মেয়ে বৈশাখীর
নিয়োগ দুর্নীতিতে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই তালিকায় একদিকে যেমন তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে, নাম রয়েছে বিজেপি নেতার মেয়েরও। চাকরি গিয়েছে বিজেপি নেতা দুলালচন্দ্র বরের মেয়ে বৈশাখীর। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা থেকে তৃণমূল প্রার্থী এবং সিবিআই-এর প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা উপেন বিশ্বাসকে হারিয়েছিলেন কংগ্রেসের দুলালচন্দ্র। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।
এ বার সেই দুলালচন্দ্রের মেয়েরও নাম জড়াল নিয়োগ দুর্নীতিতে। যদি, টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই বিজেপি নেতা। তাঁর বক্তব্য, "এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। টাকা দিইনি।" যদিও বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা গোপাল চক্রবর্তীর দাবি, চন্দন মণ্ডলের সঙ্গে দুলালচন্দ্রের যোগ ছিল।
চাকরি হারানো প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা অমিত সাহার নাম, যিনি তৃণমূলের কাউন্সিলর, টাউন সভাপতি,
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশের পর বাড়িতে গিয়ে তাঁর দেখা মেলেনি।যে হটুগঞ্জ গার্লস হাই সকুলে তিনি চাকরি করতেন, সেখানে কিংবা ডায়মন্ড হারবার পুরসভাতেও এই তৃণমূল কাউন্সিলরের খোঁজ মেলেনি।
চাকরি বাতিলের তালিকায় নাম রয়েছে কোচবিহারের মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি মদন বর্মনের। মদন বলেন, "এটা ভুল। আমার ওএমআর নয়। প্রয়োজন হলে উচ্চ আদালতে যাব।" এর আগে এই ব্লকের যুব তৃণমূলের সভাপতির গ্রুপ ডি পদে চাকরি গেছিল।
এবার গ্রুপ সি থেকে চাকরি গেল ব্লক সহ সভাপতি। পাশাপাশি গ্রুপ সি-তে চাকরি বাতিলের তালিকায় এমন একজনের খোঁজ মিলেছে, যিনি সেই সৎ রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলকে টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন: 'অনশন তুলে নিন, আন্দোলন নয়', DA আন্দোলনকারীদের ট্যুইটবার্তা শুভেন্দুর