আশাবুল হোসেন, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী: বাংলায় 'পানি', 'দাওয়াত'-এর মতো শব্দের প্রয়োগ নিয়ে সংঘাতের পর এ বার, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নর (Subhaprasanna) বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের (TMC) মুখপাত্র ঘোষ (Kunal Ghosh)। এমনকি সারদাকাণ্ডেও তাঁর যোগ রয়েছে বলে বিস্ফোরক তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। আর এই আবহেই শুভাপ্রসন্নকে বিজেপি-তে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল। চিত্রশিল্পী অবশ্য এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। 


বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের


বাংলা ভাষায় 'পানি', 'দাওয়াত'-এর মতো শব্দের ব্যবহার নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পী শুভাপ্রসন্নর সঙ্গে তৃণমূলেরই বেনজির সংঘাত সমানে চলছে। তা নিয়ে এ বার আরও সুর চড়ালেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য, "সারদাকাণ্ডে শুভাপ্রসন্নের যোগ রয়েছে। উনি প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাই ইডি, সিবিআই ব্যবস্থা নিচ্ছে না।"


বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল শুভাপ্রসন্নকে ইতিমধ্যেই দলে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আপনাকে বলছি, বিজেপি-তে আসুন। এখানে মন খুলে কাজ করতে পারবেন।" সেই প্রসঙ্গে কুণালের বক্তব্য, "উনি বিজেপি-র জন্য দরজা খোলা রাখুন।" শিল্পীকে আক্রমণ করে কুণাল আরও বলেন, "ওঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। একটি খাল ছিল। সেটি দখল করে নিয়েছেন। সারদাকাণ্ডে শুভাপ্রসন্নের যোগ রয়েছে। ওঁকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল।"


আরও পড়ুন: Madan Mitra: ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে এমন চলবে!’ কুন্তলদের নিয়োগ কাদের হাতে, তৃণমূলকে প্রশ্ন ছুড়লেন মদন


 তাৎপর্যপূর্ণভাবে তৃণমূলের এই আক্রমণাত্মক অবস্থানের মধ্য়েই চিত্রশিল্পীর হয়ে ব্যাট ধরেছে তৃণমূল। আগ্নিমিত্রার বার্তা, "আমি শুভাপ্রসন্নকে বলব, এই দলের জন্য অনেক করেছেন। যখন দুর্বল ছিল দল, অনেক কিছু করেছেন। এখন আপনাকে আক্রমণ করতে ছাড়ছে না। আপনাকে বলছি, বিজেপি-তে আসুন। মন খুলে কাজ করতে পারবেন।" এর পাল্টা কুণাল কটাক্ষ করে বলেন, "দরজা খোলা থাকলে, আমি নিজে গাড়িতে করে পৌঁছে দিয়ে আসব।"

তবে গোটা বিষয়ে এদিন অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি চিত্রশিল্পী। নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া থ্রি-র হাতিশালায় এই হচ্ছে শুভাপ্রসন্নর আর্টস একর ফাউন্ডেশন। কুণালের অভিযোগ, এটি তৈরির সময়ই একটি নিকাশি খালকে দখল করে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, "জমির মধ্যে একটি খাল ছিল। দখল করে নিয়েছে। খাল দখলের ফলে নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ৩০০-৪০০ পরিবার যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে। পরিষ্কার হচ্ছে না। দুর্গন্ধ, মশার উৎপাত। আমাকে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে আজ সকালে। আমি যাব, নিকাশির বিষয়টিও দেখব। অভিযোগ সত্যি হলে, খাল ভেঙে দিতে বলব প্রশাসনকে। আমি দলকেও রিপোর্ট দেব।"


গোটা বিষয়ে এদিন অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি চিত্রশিল্পী


যদিও খাল দখলের অভিযোগ একদিন আগেই খারিজ করে দেন শুভাপ্রসন্ন। তাঁর বক্তব্য় ছিল, "আর্টস একর আমার কেনা। এত টাকা দিয়ে কিনেছিলাম।" কিন্তু এ সবের মধ্যে যে প্রশ্নটি সকলের মাথায় ঘুরছে, তা হল, মমতার ঘনিষ্ঠ শুভাপ্রসন্নর সঙ্গে তৃণমূলের হলটা কী? নিছকই গোটা দুয়েক শব্দের ব্য়বহার ঘিরে আপত্তি নিয়ে কি এত বড় সংঘাত হতে পারে? নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ জড়িয়ে রয়েছে, উত্তর খুঁজছে রাজনৈতিক মহলও।