ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : শুক্রবার রাতের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। কসবার ব্যস্ত অভিজাত এলাকায় শপিং মলের অনতিদূরে কাউন্সিলরকে নিজের বাড়ির সামনে নিশানা করল আততায়ী। এক্কেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করার চেষ্টা। শেষ মুহূর্তে পিস্তল কাজ না করায় প্রাণে বাঁচেন তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। এই ঘটনায় কার্যত স্তম্ভিত রাজনীতিক। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের কাজকর্ম, উত্থান , সবই কলকাতার এই অঞ্চলে। নিজের বাড়ির সামনেই গুলিবিদ্ধ হতে হতে বেঁচে যান তিনি। এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কে, খুঁজে বের করতে তৎপর হয়েছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। 


তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে সামনে।  ঘটনার পরই তৎপরতার সঙ্গে আততায়ীকে পকড়াও করেন কাউন্সিলর ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সে ধরা পড়ার সময়ই জানায়, সে নাবালক। তবে পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ছেলেটি মোটেই নাবালক নয়। অভিযুক্তর দাবি অনুসারে. ১০ হাজার টাকার জন্য এই কাজ করেছে সে। তার নাম যুবরাজ সিংহ। তাকে এই 'সুপারি' দিয়েছিল ইকবাল নামের এক ব্যক্তি। যার আস্তানা কলকাতার পোর্ট এলাকায়। 


ঘটনায় এক ট্য়াক্সি চালককেও আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কলকতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ট্য়াক্সিটি। হামলার ঘটনায় ট্য়াক্সি চালক কিংবা ট্য়াক্সির কী ভূমিকা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ট্যাক্সি চালক ওই সময় মত্ত অবস্থায় ছিল, তাই তার থেকে সঙ্গলত জবাব পাওয়া যাচ্ছিল না।


অন্য়দিকে লালবাজার সূত্রে খবর, হামলার ঘটনায় অন্য়তম ভূমিকা পালন করেছে ইকবাল নামে এক ব্য়ক্তি। বর্তমানে এই ইকবাল পলাতক। তবে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে ইকবালের আসল নাম অন্য়। ইকবাল ছদ্মনামে অপারেশনটি চালাচ্ছিল সে। কলকাতার বন্দর এলাকা থেকে হামলার বলু প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল। লালবাজার সূত্রে খবর, ইকবালই হামলাকারীদের নিয়ে এসে কলকাতা বন্দর এলাকায় থাকার ব্য়বস্থা করে দেয়।  পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে , শুক্রবার যে হামলাকারীকে পাকড়াও করে পুলিশ, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্য়মে এই ইকবাল নামটি উঠে আসে।  এই ঘটনায় ২-৩ জন নয়। পুরো অপারেশনটি করতে ৮-৯ জন যুক্ত থাকতে পারে। এই ঘটনার আর কারা কারা যুক্ত, সেই বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ক্য়ামেরার ফুটেজ।   


অন্যদিকে  তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের দাবি, এই হামলার পিছনে রাজনীতি নয়, আছে কারও অন্য কিছু উদ্দেশ্য । তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, ফোন করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সাময়িক ধাক্কা কাটিয়ে কাউন্সিলর  জানালেন, এত সহজে ময়দান ছাড়ছেন না তিনি। এর শেষ দেখেই ছাড়বেন। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।