পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: ট্যাব কেলেঙ্কারির জেরে গুলি-সওয়াল এবার তৃণমূল নেতার মুখে। ট্যাব কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের গুলি করা উচিত ছিল। এমনই মন্তব্য করলেন বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। স্কুল কমিটিতে থাকা তৃণমূল নেতাদের সংগঠিত দুর্নীতির জাল। আক্রমণ শানিয়েছেন বাঁকুড়ার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। 


পশ্চিমবঙ্গের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা জালিয়াতির মাথা কে বা কারা? এত বড় জালিয়াতি কাদের ব্য়র্থতায় হল? এই প্রশ্নে এখন তোলপাড় রাজ্য়।বিরোধীদের নিশানায় তৃণমূল সরকার।আর এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ে নতুন নিদান দিলেন বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ।বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ  অরূপ চক্রবর্তী বলেন,কী করে এটা ডাইভার্ট হয়ে গেল? কারা এটা করল? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কি ঘটনায় জড়িত? নাকি অফিসাররা জড়িত? তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের দেশে গুলি করার বিধান নেই, তাদেরকে গুলি করা উচিত ছিল।  
 
 বাঁকুড়ার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, এটা সাইবার হানা বলে প্রচার হচ্ছে। কিন্তু মোটেই সাইবার হানা এর মূল কারণ নয। মূল কারণ হচ্ছে, তৃণমূলের নেতা যারা বিভিন্ন স্কুল কমিটিগুলিতে আছে, তাদের একটি সংগঠিত দুর্নীতির জাল।ট্যাবের টাকা বণ্টনের সরকারি সিস্টেমে কীভাবে হল কারচুপি? কী ভাবে সরকারি পোর্টালে ঢুকে প্রতারণা করল প্রতারকরা? তাহলে কি সরষের মধ্যেই থেকে গেছে ভূত? ট্যাব কেলেঙ্কারির তদন্তের মধ্যে বড় হয়ে উঠেছে এইসব প্রশ্ন। অস্বস্তিতে প্রশাসন। 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পে ট্যাব কেলেঙ্কারির জাল কি শুধু বিহার, ঝাড়খণ্ডেই বিস্তৃত? বাঁকুড়া জেলার ট্যাব কেলেঙ্কারির তদন্তে পাঞ্জাব যোগ মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি।
 
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, 'সমস্ত নেতারা, তাঁরা নিজেদের মধ্যে সংগঠিত হয়ে কোন কো হ্যাকারকে এই সব নম্বর দেবে, তা ঠিক করে ফেলেছে। না হলে এটা সম্ভব নয়। যেভাবে সমস্ত দুর্নীতি, অপরাধী- সব এই তৃণমূল দলটার মধ্যে ঢুকে গেছে, কোনও কিছু করা পশ্চিমবঙ্গে ভয়ঙ্কর মুশকিল, যতক্ষণ না এই তৃণমূল শাসিত এই সরকারের পদত্যাগ হচ্ছে। '


বাঁকুড়ার  তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, এটা যারা করেছে, আমাদের দেশে গুলি করার আইন নেই ফাঁসির শাস্তি আছে। এদের তো এই ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের দেশে গুলি করার বিধান নেই, তাদেরকে গুলি করা উচিত ছিল। আমাদের দেশে তো এই সিস্টেমটা নেই, আমাদের দেশে আইনের সাজা হবে। এদের এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া উচিত এবং এটা প্রকাশ্যে আনা উচিত যে, এই এই লোক জড়িত - যাতে পাবলিক মানুষ এদেরকে ঘৃণা করে, বয়কট করে এই সমস্ত অফিসারদের, যারা যুক্ত তাদের।


আরও পড়ুন, গায়ে থুতু ফেলার প্রতিবাদে মহিলার 'শ্লীলতাহানি' ফরাক্কায় ! কান ছিঁড়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ


  জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে বাঁকুড়া জেলার ১০ টি স্কুলের ৫৩ জন পড়ুয়ার ট্যাবের জন্য বরাদ্দ টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়ার প্রমাণ হাতে এসেছে। ৬ জনের টাকা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও ৪৭ জনের টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, সিমলাপাল ব্লকের মঙ্গলময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের ১৭ জন পড়ুয়ার টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে গেছে। একাংশের টাকা জমা পড়েছে পাঞ্জাবের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ওই অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করা হয়েছে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।