জলপাইগুড়ি: অভিশপ্ত বিকানের এক্সপ্রেসে (Bikaner-Guwahati Express) চড়ে জয়পুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কোচবিহারের ( Cooch Behar) বাসিন্দা অনেক পরিযায়ী শ্রমিক। রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন তাঁরা। করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে বাড়ি ফিরছিলেন শ্রমিকরা। বাড়ি পৌঁছনোর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা (Jalpaiguri Train Accident)। তাতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক। বরাতজোরে বেঁচে যাওয়া S10 কামরার এক যাত্রী অজিত বর্মনের চোখে মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। দুর্ঘটনার কথা বলতে গিয়ে রীতিমতো গলা কেঁপে আসছে তাঁর। এদিকে, জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর হাসপাতালেও ভিড় করেছেন অনেকে। আহতদের সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছেন পরিজনরা। আবার কেউ কেউ কোনও খোঁজখবর না পেয়ে রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।
যেমন জলপাইগুড়ির বচ্চন ওরাঁও। তিনি ওই অভিশপ্ত ট্রেনের যাত্রী তাঁর ভাই মঙ্গল ওরাঁয়ের কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না। এস ৫ কামরায় ছিলেন ওই যাত্রী।
কোচবিহারের প্রদীপ বর্মনও তাঁর ভাইকে খুঁজে চলেছেন। কিন্তু কোথাও পাননি। প্রদীপ বর্মন জানিয়েছেন, তাঁর ভাই রাজস্থানের জয়পুর থেকে ফিরছিলেন। ট্রেন থেকে নামার কিছু আগেই ফোন করেছিলেন তাঁর ভাই। দাদাকে জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়িই বাড়ি পৌঁছে যাবেন তিনি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই প্রদীপ বর্মন ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পান। সেই খবর পেয়ে টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখেন। ভাইকেও ফোনে আর পাননি। এরপর আর অপেক্ষা করেননি। দ্রুত চলে আসেন দুর্ঘটনাস্থলে। যে কামরায় তাঁর ভাইয়ের থাকার কথা ছিল, সেখানেও খোঁজ করেন তিনি। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। ময়নাগুড়ি হাসপাতালে চারটি দেহ দেখানো হয় তাঁকে। কিন্তু ওই দেহগুলির একটিও তাঁর ভাইয়ের নয়। এরপর থানাতেও নিয়ে কয়েকটি দেহ দেখানো হয় তাঁকে। কিন্তু প্রদীপবাবু খোঁজ পাননি ভাইয়ের। আজ কিছুক্ষণ পরে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে কয়েকটি দেহ তাঁকে দেখানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির দোমহনিতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮। আহত হয়েছেন ৪২ জন।