সৌভিক মজুমদার, অর্ণব মুখোপাধ্য়ায় ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টারকাণ্ডে, পুলিশ কমিশনারের রিপোর্টে অসন্তোষ প্রকাশ করল হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। এই ঘটনায় কেউ এখনও গ্রেফতার হয়নি। যা নিয়ে রাজনৈতিক বাগযুদ্ধও চলছে সমানতালে।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বাড়ির সামনে এবং হাইকোর্ট চত্বরে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার এবং তাঁর এজলাসের বাইরে আইনজীবীদের বিশৃঙ্খলার ঘটনায় বুধবার শুনানি ছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির তৈরি করে দেওয়া তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে। সেখানেই পোস্টারকাণ্ড নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের রিপোর্টে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতিরা। ৮ জানুয়ারি রাতে, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে। তাঁর যোধপুর পার্কের বাড়ির আশেপাশে এবং হাইকোর্ট চত্বরে একাধিক পোস্টার পড়ে।
এই প্রেক্ষাপটে ১৭ জানুয়ারি, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার আদালত অবমাননা সংক্রান্ত মামলায়, বিচারপতি টি এস শিবাগননম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের বেঞ্চ পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয়, বিচারপতির বাড়ির আশেপাশে এবং হাইকোর্ট চত্বরে লাগানো পোস্টার ছাপানোর জন্য কে বা কারা বরাত দিয়েছিল - তা খুঁজে বের করতে হবে।
তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে বুধবার জমা পড়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের রিপোর্ট। এদিন সেই প্রসঙ্গেই বিচারপতি টি এস শিবাগননাম বলেন, এই রিপোর্টে আমরা সন্তুষ্ট নই। তারপর তিনি রিপোর্ট পড়ে বলতে থাকেন, কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের এলাকায় ২৫০টির বেশি ছাপাখানা রয়েছে।
সিপি রিপোর্টে জানিয়েছেন, ৩৯টি ছাপাখানার মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিচারপতি বলেন, সিপি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, পোস্টারের কালি ও কাগজ CFSL কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু CFSL কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, পোস্টার এবং কালি থেকে ছাপাখানা শনাক্ত করার পরিকাঠামো তাদের নেই। ৮ জানুয়ারি রাতে বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে কুরুচিকর পোস্টার দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন উঠছে,
তারপর এক মাস কেটে গেলেও, কেন কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ? কেন সিসিটিভি ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের খুঁজে বের করা যাচ্ছে না? বিচারপতি টি এস শিবাগননাম সিপি-র রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেন, সেখানে বলা হয়েছে, যারা পোস্টার লাগাতে এসেছিল, তাদের সবাই মাস্ক পরেছিল।
তাই তাদের সনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৭টি জায়গায় ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং রিপোর্টে ৬ জন ব্যক্তির নাম রয়েছে। তদন্তের জন্য আরও ৩ সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, রিপোর্ট জমা পড়েছে। যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের যুক্তি দিয়েছেন। কিন্তু শুভেনদুর এ নিয়ে বলার কী আছে। ও তো অমিত শাহর জুতো পালিশ করে তদন্ত থেকে বেঁচে রয়েছে। আদালতের কোনও অসন্তোষ থাকলে, যারা রিপোর্ট দিয়েছে তারা বলবেন। এতে বিজেপির উল্লসিত হওয়ার কী আছে। পোস্টারকাণ্ডে অভিযুক্তরা কতদিনে ধরা পড়বে? সেদিকেই নজর সবার।