আসানসোল: অনুব্রতর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী এই শিবঠাকুর মণ্ডল কে? অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার আগে কেনই বা তিনি এক বছরের পুরনো অভিযোগ সামনে আনলেন? তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান শিবঠাকুরের দাবি, বর্তমানে জেলবন্দি অনুব্রত, তাই অভিযোগ করেছেন। এর আগে ২০১৩-য় তৃণমূল পরিচালিত বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হন শিবঠাকুর মণ্ডল। আড়াই বছর পর, অনাস্থা এনে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ঠিক ৬ মাস পর, অনাস্থা এনে ফের প্রধান করা হয় শিবঠাকুরকে। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের আগে পর্যন্ত তৃণমূলের প্রধান ছিলেন তিনি। ২০১৮-য় পঞ্চায়েতে টিকিট পাওয়া নিয়ে সমস্যা হয়। দলের সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয়ে বলে অভিযোগ প্রাক্তন তৃণমূল প্রধানের। অভিযোগ, এরপর একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনার কথা শুনে অনুব্রত তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে মারধর করেন।

গরুপাচার মামলায় অনুব্রত-যোগের তদন্তে আচমকা নতুন মোড়! মোক্ষম সময়ে এক বছরের পুরনো অভিযোগ, হঠাৎ চাগাড় দিয়ে ওঠায়, রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনার আলোড়ন তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ আইনি টানাপোড়েনের পর, সোমবারই অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছিল ইডি। কিন্তু, তার ২৪ ঘণ্টার মধ্য়েই পুরনো মামলায় এক সপ্তাহের পুলিশ হেফাজত হল বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার। অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূলের বীরভূমেরই এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। 

আর সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দাপুটে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে দুবরাজপুর থানার পুলিশ। মঙ্গলবার সেই মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিল দুবরাজপুর আদালত। 

নিজের জেলায় অনুব্রত: ৪ মাস পর নিজের জেলায় অনুব্রত মণ্ডল। এ দিন দুবরাজপুর আদালতে তাঁকে দেখতে তৃণমূল নেতাদের ভিড়। সকাল থেকে আদালত চত্বরে উপস্থিত দুবরাজপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পীযূষ পাণ্ডে ও ৩ তৃণমূল কাউন্সিলর। বুকে অনুব্রত, অভিষেক-মমতার ছবি সেঁটে, হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে দুবরাজপুর পুরসভার কর্মী রঞ্জিত গড়াই। মঙ্গলবার সকালে আসানসোল জেল থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে যাওয়া হল দুবরাজপুরে। সকালে জেলে উপস্থিত হন আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পদস্থ আধিকারিকরা। আনা হয় কমব্যাট ফোর্স। অনুব্রতকে কোর্ট লক আপ থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হল এজলাসে। ১৪ দিনের জন্য বীরভূমের তৃণমূল সভাপতিকে হেফাজতে চাইছে রাজ্য পুলি

পুলিশি হেফাজত: তৃণমূল কর্মীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশের পর, গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে কি দিল্লিতে নিয়ে যেতে পারবে ইডি? সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এ নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় আইনি পরামর্শ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যেই আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের নির্দেশ। দিল্লির আদালতের নির্দেশনামার কপি পৌঁছে দেওয়া হবে আসানসোল জেলে। ২৭ ডিসেম্বর ফের দুবরাজপুর আদালতে তোলা হবে অনুব্রতকে। ওইদিন ইডি-র অফিসাররা আদালতে উপস্থিত থাকবেন কি না, তা নিয়েও আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।