কলকাতা: বছর একান্নর এক ব্যক্তি। পেশায় ছোট ব্যবসায়ী। গড়িয়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি ভুগছিলেন হার্ট সংক্রান্ত সমস্যায়। End Stage Heart Failure-এ ভুগছিলেন তিনি। গত ছ মাস ধরে কার্ডিওলজির আউটডোরে দেখাচ্ছিলেন তিনি। গত কয়েক মাসে বারবার হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছে তাঁকে। home intravenous medications (milrinone) দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। অসুস্থতার কারণে প্রায় গৃহবন্দি দশা হয়েছিল তাঁর। সাধারণ জীবনযাপন করাটাও তাঁর কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৫ মার্চ, তাঁর হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন (Heart Transplant) হয়। তাঁকে হৃদপিণ্ড দেন ৪৯ বছরের এক ব্যক্তি। পথদুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে ব্রেন ডেড ঘোষণা করা হয়। ওই ব্যক্তির আত্মীয়রা অঙ্গদানের বিষয়ে সম্মত হলে, একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদপিণ্ড সংগ্রহ করে আর এন টেগোর হাসপাতালে আনা হয়। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে অস্ত্রোপচার চলে, হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন হয়। সন্ধেয় শেষ হয় অস্ত্রোপচার।
কারা অস্ত্রোপচার করেছেন?
ডা. মৃণালেন্দু দাস, ডা. প্রদীপ নারায়ণ, ডা. অয়ন কর, ডা. ইয়াশাসকার, ডা. পত্রলেখা, ফিজিসিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট অপূর্ব সাহু এবং শুভজিৎ দত্ত, তাঁদের সঙ্গে কার্ডিয়াক অ্য়ানাস্থেশিয়া টিম, ক্লিনিকাল পারফিউশন, নার্স এবং ক্রিটিকাল কেয়ার টিমের লোকজন এই অস্ত্রোপচারে ছিলেন।
ট্রান্সপ্ল্যান্ট কোঅর্ডিনেটর, অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ হেড এবং হেড অফ ক্লিনিকাল অপারেশনের তরফে সবরকম সহায়তা করা হয়েছে। গ্রিন করিডর তৈরি করে সাহায্য করেছে কলকাতা পুলিশ।
কলকাতার আরএন টেগোর হাসপাতালের ফেসিলিটি ডিরেক্টর অভিজিৎ সিপি বলেন, 'আবার কলকাতা সাক্ষী থাকল হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের, যা আরএন টেগোর হাসপাতালে হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।'
নারায়াণা হেলথ্-এর পূর্ব ও দক্ষিণ-এর চিফ অপারেটিং অফিসার আর ভেঙ্কটেশ বলেন, 'এক রোগীকে নতুন প্রাণ দিয়েছে আমাদের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর পরিবারের লোকজনকেও ধন্যবাদ দিতে চাই। তাঁদের সাহায্য ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।'
আর এন টেগোর ইন্সটিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়েন্স:
কলকাতায় অবস্থিত আর এন টেগোর ইন্সটিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়েন্স, একটি ৬৮১ শয্যার NABH accredited সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। বাইপাসের ধারে মুকুন্দপুরে রয়েছে এটি। পূর্ব ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল এটি। হার্ট, কিডনি, লিভার, নিউরো এবং হাড়ের চিকিৎসা এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য প্রথম সারির হাসপাতাল এটি।
আরও পড়ুন: ৩০ পেরিয়েছেন? এড়াচ্ছেন শরীরের সমস্যাগুলো? মহিলারা এই পরীক্ষাগুলো অবশ্যই করুন