ঋত্বিক প্রধান, জয়দীপ হালদার ও শান্তনু নস্কর, দিঘা ও সাগর : দিনভর ভারী বৃষ্টি রাজ্যের উপকূলের দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। তার জেরে দিঘায় (Digha) উত্তাল সমুদ্র। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Paragana) একাধিক নদীর জল বাঁধ টপকে ঢুকেছে গ্রামে। বেশ কিছু গ্রাম জলমগ্ন।


উত্তাল সমুদ্রে স্নান করতে নেমে ভয়ঙ্কর বিপদ। ঢেউয়ে তলিয়ে যাচ্ছিলেন এক যুবক। পাড় থেকে দেখে চিত্‍কার শুরু করেন পর্যটকরা। একজন নুলিয়া বিপদ দেখে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এরপর নুলিয়াই যুবককে পাড়ে আনেন। তাঁকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ভর্তি করা হয় দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। 


উত্তাল সমুদ্র, পর্যটকদের ভিড়-


উত্তাল সমুদ্র। বড় বড় ঢেউ। সেইসঙ্গে প্রবল বৃষ্টি দিঘায়। তা সত্ত্বেও পর্যটকদের ভিড়। উত্তাল সমুদ্রে নামার ওপর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই রবিবার সকালে সমুদ্রাস্নানে নেমে তলিয়ে যাচ্ছিলেন ওই পর্যটক। প্রত্যক্ষদর্শী এক পর্যটক বলেন, আমরা দেখলাম তলিয়ে যাচ্ছিল। নুলিয়াকে বলি।


আরও পড়ুন ; কটাল ও ভারী বৃষ্টির জের, জোড়া ধাক্কায় জলমগ্ন মৌসুনি দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা


অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা, গোসাবা, সাগরে কটালের কারণে ফুঁসছে একাধিক নদী। নদী বাঁধ টপকে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে একাধিক এলাকায়। চিনাই নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে মৌসুনি দ্বীপে। জলের তলায় চলে গেছে গ্রামের অনেক বাড়ি, চাষের জমি। 


সাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ টপকে জল ঢুকছে কচুবেড়িয়া এলাকায়। বেশ কিছু বাড়ির ভিতরে জল ঢুকেছে। মুড়িগঙ্গার জলস্ফীতি বিপত্তি ঘটিয়েছে নামখানা ব্লকেও। গ্রামে জল ঢুকে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে একাধিক বাড়ি। নামখানার বাসিন্দা নমিতা শীট বলেন, জলমগ্ন হয়ে আছি। বাড়ির মধ্যে জল ঢুকে গেছে।


এদিকে রায়দিঘির মণি নদীর জল ঢুকে জলমগ্ন কুমড়োপাড়া এলাকা। বেশ কিছু বাড়ি জলমগ্ন। উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। এনিয়ে রায়দিঘির বাসিন্দা অন্তরা দাস বলেন, জল ঢুকে গেছে বাড়ির মধ্যে। রাস্তা ডুবে গেছে। রান্না করতে পারছি না। ঘরের অবস্থা খারাপ।


গোসাবা ব্লকের কুমিরমারী, বিপ্রদাসপুর, কচুখালি, আমতলি সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রায়মঙ্গল, বিদ্যাধরী নদীর জল গ্রামে ঢুকেছে।  


কুমিরমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু বাড়িও জলমগ্ন। বাসিন্দাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্থানীয় ত্রাণ শিবিরে। গোসাবার বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় কুমিরমারী এলাকায় নদীবাঁধ উপচে গ্রামে জল ঢুকেছে। কিছু পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে এসেছি।


শুধু উপকূল এলাকা নয়, এদিন বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও। দফায় দফায় বৃষ্টির সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া।