সন্দীপ সরকার, কলকাতা: কলকাতার বুকে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ। সেখানেই থমকে হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি-এর পরীক্ষা। প্রায় মাস দেড়েক ধরে টেস্ট কিট ব্যবহার করে পরীক্ষা হচ্ছে না। কিটের গুণগত মান নিয়ে বারবার অভিযোগ করা হলেও তা বদল করা হয়নি বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের। সেই কারণে কলকাতা মেডিক্যালে আপাতত ব়্যাপিড কিট ব্যবহার করেই হেপাটাইটিস পরীক্ষা করা হচ্ছে। 


কী সমস্যা:
কলকাতা মেডিক্যালে প্রায় দেড় মাস ধরে টেস্ট কিট ব্যবহার করে হেপাটাইটিস B ও C-র পরীক্ষা বন্ধ। কলকাতা মেডিক্যালে হেপাটাইটিস পরীক্ষার কিটের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন চিকিৎসকরাই। তাঁদের দাবি, সুপারকে বারবার জানালেও টেস্ট কিট পরিবর্তন করা হয়নি। যার জেরে ওই কিট ব্যবহার করে এলাইজা পদ্ধতিতে হেপাটাইটিস পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিৎসকরা। বদলে ব্যবহার করছেন র‍্যাপিড কিট। চিকিৎসকদের অভিযোগ, অস্কার মেডিকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার সরবরাহ করা কিটগুলি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ৮০ শতাংশেরও বেশি রিপোর্ট নেগেটিভ। যে রিপোর্টগুলি পজিটিভ সেগুলিও নির্দিষ্ট মানদণ্ডের অনেক নীচে। চিকিৎসকদের দাবি, ডিসেম্বরেই চিঠি দিয়ে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়। তা সত্ত্বেও ওই কিট পরিবর্তন করা হয়নি বলে অভিযোগ। হেপাটাইটিস বি ও সি-এর পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই টেস্ট করে নিশ্চিত হওয়ার পরই যে কোনও অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। কলকাতা মেডিক্যালে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ রোগীর হেপাটাইটিস বি ও সি পরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, র‍্যাপিড কিট কখনওই এলাইজার বিকল্প হতে পারে না। অথচ দিনের পর দিন এই র‍্যাপিড কিট ব্যবহার করেই পরীক্ষা করতে হচ্ছে। হেপাটাইটিস পরীক্ষা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এই পরীক্ষার জন্য কিট যে গুরুত্বপূর্ণ তা বলছেন একাধিক চিকিৎসক। 


সম্প্রতি হেপাটাইটিস বি ও সি-কে নোটিফায়েবল ডিজিজ ঘোষণা করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতা মেডিক্যালের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি হাসপাতালে যথাযথ পদ্ধতিতে এই রোগের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। 


হাসপাতালের বক্তব্য:
হাসপাতালের সুপার অঞ্জন অধিকারী জানিয়েছেন, টেন্ডারপ্রাপ্ত সংস্থার সরবরাহ করা কিট অত্যন্ত নিম্নমানের। তাই ওই কিট ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। হয় ওই সংস্থা বদল করতে হবে, নয়তো আমাদেরকে আলাদা কিট কেনার অনুমতি দিতে হবে। কারণ, ত্রুটিপূর্ণ কিট ব্যবহার করা রোগী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী- সবার পক্ষেই অত্যন্ত বিপজ্জনক।


আরও পড়ুন: 'ওদের জন্য কী করিনি?' বগটুই নিয়ে আক্ষেপ মমতার