সৌভিক মজুমদার, সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও রুমা পাল, কলকাতা: নির্মাণকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্য়ুতে এবার সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata HighCourt) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মৃত্যু হয় রাজারহাটের নির্মাণকর্মীর। পরিবার খুনের অভিযোগ দায়ের করে। আদালতে পুলিশ জানায় মত্ত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এরপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় পরিবার। 


এখন রাজ্য়ের যে যে মামলায় সিবিআই তদন্ত:
নিয়োগ দুর্নীতি, গরুপাচার, কয়লাপাচার, চিটফান্ড মামলা, কাঁথিতে শ্মশান কেলেঙ্কারি, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা, হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ড, বগটুইকাণ্ড, ভাদু শেখ খুন, হলদিয়া বন্দরে তোলাবাজির অভিযোগ-সহ রাজ্য়ের একাধিক মামলা


এই তালিকায় এবার যুক্ত হল নির্মাণকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্য়ু মামলা। তা নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের (TMC) রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'বিচারপতি রক্ষাশেখর মান্থা, দুঃখিত মাফ করবেন রাজশেখর মান্থা সিবিআই দিচ্ছেন। কিন্তু যে গুলি পুলিশ করে ফেলতে পারবে৷ সেখানে সিবিআই দিচ্ছেন।' 


কবেকার ঘটনা:
২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, শেষ ফোনে বাড়ির উদ্দেশ্য়ে ফিরছেন বলে জানিয়েছিলেন ওয়াকিল। কিন্তু, রাতে বাড়িতে ফেরেননি। পরদিন ভোরে, রাজারহাটের বগডোবার বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হয় তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ। পাশে পড়েছিল তার বাইক। ঘটনার ৮ দিন পর পরিবারের তরফে বেশ কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয়ের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। পরিবারের দাবি, স্থানীয় চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধানের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে ওয়াকিলের জেসিবি নিয়ে গন্ডগোল চলছিল। পরিবারের অভিযোগ, একাধিকবার ওয়াকিলকে মারধর করা হয়। পরিবারের দাবি, মৃত্যুর ৩দিন আগে স্থানীয় উপপ্রধানের লোকজন টাকা চেয়ে হুমকি দেয়। সেই সময়, উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানান ওয়াকিল। অভিযোগ জানানোর পর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ফের তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরই নির্মাণকর্মী ওয়াকিলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতের ভাই সাকিল আহমেদ বলেন, 'হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ কিছু করেনি। মার্ডার করে দেব বলেছিল। মাটি কাটার গাড়ি নিয়ে সমস্য়া। মেরেছিল, সেই ছবি পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল।' 


বারাসাত আদালতে (Barasat Court) রাজারহাট থানার পুলিশ প্রাথমিক রিপোর্টে মত্ত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মৃত্যুর উল্লেখ করে। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় নির্মাণকর্মীর পরিবার। আদালত একজন ময়নাতদন্তের চিকিৎসককে রিপোর্ট খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেয়। চিকিৎসক জানান, ভারী কোন জিনিস দিয়ে আঘাতের ফলেই মৃত্যু হতে পারে। সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। 


পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর পর প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। অবশেষে সিবিআই তদন্তে কি মিলবে সুবিচার?


আরও পড়ুন: সাগরদিঘি উপনির্বাচন বামেদের সমর্থন চেয়ে চিঠি কংগ্রেসের, ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই