সুনীত হালদার, কলকাতা: দেরিতে ঢুকলেও, রাজ্যে বর্ষার রেশ রয়েছে এখনও। তার মধ্যে এগিয়ে আসছে শারোদৎসবেও। সেই আবেগে এবার বাড়তি মাত্রা যোগ করতে চলেছে পদ্মার ইলিশ। দুর্গাপুজো শুরু হতে এখনও দেড় মাস বাকি (Kolkata News)। তার আগেই কলকাতার বাজারে এসে পৌঁছচ্ছে ঝকঝকে, রুপোলি ইলিশ। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকেই কলকাতার বাজারে ইলিশ কিনতে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী মৎস্য ব্যবসায়ীরা। (Hilsa in Kolkata)


কলকাতার ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, দুর্গাপুজোর উপহার হিসেবে বাংলাদেশ সরকার পদ্মার ইলিশ পাঠায় কলকাতায়। বিগত চার বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে। এ বছর পুজোর আগেও যাতে ইলিশ এসে পৌঁছয়, তার জন্য সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রক এবং কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। এখনও পর্যন্ত বিষয়টি ইতিবাচক দিকেই এগোচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। 


ওই মৎস্য ব্যবসায়ী সংগঠনের সচিব সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার এবং সে দেশের মৎস্য রফতানিকারীদের কাছে আগেই আবেদন জানিয়ে রেখেছেন তাঁরা। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী সকলে। অনুমোদন মিলবে যেদিন, তার পর দিন থেকেই এপার বাংলায় পদ্মার টাটকা ইলিশ এসে পৌঁছবে বলে আশাবাদী তাঁরা। 


আরও পড়ুন: Dhupguri Poll 2023: 'ভোটারদের স্লিপ দিচ্ছে রাজ্য পুলিশ', বিধিভঙ্গের অভিযোগ BJP প্রার্থী তাপসী রায়ের


মকসুদ জানিয়েছেন, পদ্মার টাটকা ইলিশের চাহিদা গোড়ার দিকে একটু বেশিই থাকে। তাই শুরুতে দাম একটু বেশি হতে পারে। মৎস্য ব্যবসায়ীদের অনুমান, পাইকারি বাজারে কেজিতে ইলিশের দাম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। সময়ের সঙ্গে যদিও দাম কমবে বলেই মত ব্যবসায়ীদের। পরের দিকে কেজিতে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে ইলিশের দাম, মনে করছেন তাঁরা। 


কলকাতার ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার এদেশে ইলিশ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। দীর্ঘ ছয় বছর সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল। ২০১৯ সাল থেকে ফের ইলিশের রফতানি শুরু হয়। কিন্তু যে পরিমাণ ইলিশ রফতানিতে এই মুহূর্তে অনুমোদন রয়েছে, একমাসে সব গ্রহণ করা সম্ভব হয় না ব্যবসায়ীদের পক্ষে। তাই মৎস্য ব্যবসায়ীদের তরফে সময়কাল বাড়িয়ে ৩০ থেকে ৪০ দিন করার অনুরোধও জানানো হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে। ফলে কলকাতার বাজারে এ বছরে আরও বেশি পরিমাণ ইলিশ আমনদানি সম্ভব হবে বলে মনে করছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। 


মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন , গত বছর ২৯৯০ মেট্রিক টন ইলিশ আনার অনুমোদন মিলেছিল। কিন্তু হাতে যথেষ্ট সময় না থাকায়, মাত্র ১৩০০ মেট্রিক টন ইলিশই কলকাতায় ঢোকে। ২০২১ সালে ৪৬০০ মেট্রিক টনের অনুমোদন থাকলেও, আনা সম্ভব হয়েছিল মাত্র ১৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ। তাই সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত ব্যবসায়ীদের। হাতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি রয়েছে। নদীগর্ভ থেকে পাতে রুপোলি শস্য ওঠার অপেক্ষা করছেন বাঙালি। ব্যবসায়ীরাও প্রহর গুনছেন।