সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, মগরা: ১১ দিন ধরে নিখোঁজ হুগলির মগরার এক যুবক। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর শুরু হয়েছে তল্লাশি। নিখোঁজ যুবকের সন্ধানে গঙ্গায় নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের।


পুলিশ সূত্রে খবর, মগরার ত্রিবেণীর বাসিন্দা অতনু মাঝি (২১) গত ১৫ জানুয়ারি বিকেলে খামারগাছিতে দাদুর বাড়ি থেকে চালের গুঁড়ি আনতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরোন। এরপর থেকেই তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। এই যুবকের পরিবার কোনও সন্ধান না পেয়ে মগরা থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এরপর ২১ জানুয়ারি এই যুবকের পরিবার এলাকারই দুই যুবককে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাঁদের জেরা করে আর একজন সঙ্গীর নাম জানতে পারে পুলিশ। এরপর সেই যুবককেও আটক করে পুলিশ। ধৃত তিনজনকেই পরে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেয় পুলিশ।


নিখোঁজ যুবকের পরিবারের অভিযোগ, ১৫ জানুয়ারি বিকেলে বাড়ি থেকে বেরনোর পর তাঁকে ত্রিবেণী শ্মশান ঘাটে ডেকে নিয়ে যান তাঁর দুই বন্ধু। সেখানে আরও চারজন যুবক পৌঁছে যান। শ্মশান ঘাটে বসে নেশা করেন তাঁরা। এরপর নিজেদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে যায়। এরই মধ্য়ে অতনুকে মেরে গঙ্গায় ফেলে দেন তাঁর বন্ধুরা।


তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অতনু ও তাঁর বন্ধুরা গাঁজা, হেরোইনের মতো মাদকের নেশা করতেন। সেদিন তাঁরা পান্ডুয়া গিয়েছিলেন হেরোইন আনতে। অতনুর মা রেখা মাঝিও সে কথা জানিয়েছেন। মাদক এনে ত্রিবেণী ঘাটে বসে সন্ধেবেলা সাতজন নেশা করেন। সেখানে তাদের মধ্যে কোনও একটি বিষয় নিয়ে বচসা থেকে মারামারি শুরু হয়ে যায়।


অতনুর যে তিন বন্ধুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তাঁদের মধ্যে দু’জন জেরার সময় তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, বাকি চারজন তাঁদের বন্ধুকে মারছে দেখে তাঁরা ভয় পেয়ে পালিয়ে যান।


অতনুর কী হল, বন্ধুরা তাঁকে মেরে গঙ্গায় ফেলে দিল নাকি অন্য কোথাও চলে গিয়েছেন তিনি, তা এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। তাই আজ বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের একটি দল ডুবুরি নিয়ে গঙ্গার ঘাটে তল্লাশি চালায়। তবে তল্লাশি চালিয়েও নিখোঁজ যুবকের সন্ধান মেলেনি। মগরা থানার পুলিশ গঙ্গার ঘাটে গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় নিখোঁজ যুবকের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।