মোহন দাস, আরামবাগ : জঙ্গল মহল (Jangal Mahal) নয়, সাতসকালে হুগলির (Hooghly) আরামবাগের (Arambag) লোকালয়ে ঢুকে পড়ল হাতি। ভোর থেকে বেলা গড়িয়ে বিকেল, কার্যত তাণ্ডব চালাল এক দাঁতাল। একজন স্থানীয় বাসিন্দা ও হাতি বাগে আনতে যাওয়া হুল্লা পার্টির এক সদস্যকে আহতও করেছে সে। হাতিটিকে শান্ত করা গেলেও গোটা এলাকায় তৈরি হয়েছে প্রবল আতঙ্ক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোটা আরামবাগ শহরজুড়ে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। বারবার করা হচ্ছে মাইকে প্রচারও। হাতির তাণ্ডব জারি থাকার জেরে আগামীকাল সকাল ৬ টা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।


ভোরবেলা সাক্ষাৎ গজদেব !


শনিবার ভোর বেলায় পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipore) দিক থেকে গোঘাট হয়ে আরামবাগে ঢুকে পড়ে শাবক-সহ দাঁতালটি। দীর্ঘক্ষণ আরামবাগের কালীপুরের একটি জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল সে। লোকালয়ে হাতি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। দাঁতালটি জমির ফসল নষ্ট করেছে বলে তাঁদের অভিযোগ। সকালের দিকে দ্বারকেশ্বরের একদিকে থাকলেও বেলা গড়াতেই দাঁতালটি ঢুকে পড়ে আরামবাগ টাউনে ! সবজি বাজার বা সদর ঘাটে পৌঁছে সেখানে তাণ্ডব চালায় হাতিটি। ভাঙচুর করে কয়েকটি বাইক। তবে তার মাঝেই একজন সাধারণ মানুষ ও একজন হুল্লা পার্টির সদস্যকে আহতও করেছে দাঁতালটি। মাঝে আরামবাগ টাউনে এক দোকানে আশ্রয় নেওয়া লোকেদের দিকেও তেড়ে যায় হাতিটি। হাতি ঢুকে পড়ার খবর জেনেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ (Police) ও বন দফতরের (Forest Department) কর্মীরা। হাতি তাড়াতে বাঁকুড়া (Bankura) ও পশ্চিম মেদিনীপুরের হুলা পার্টিকেও খবর দেওয়া হয়। তারাও দ্রুত এসে পৌঁছয়।


আহত কয়েকজন


দ্বারকেশ্বর পেরিয়ে আরামবাগ টাউনে ঢুকে পড়ার পর দুজনকে আহত করে দাঁতালটি। তেড়ে যায় দোকানে জড়ো হওয়া লোকেদের দিকে। ভাঙচুর চালায় বাইক। টাউনে ঢুকে পড়ার পর হাতির সামনে পড়ে যান এক ব্যক্তি। স্থানীয় সূত্রে খবর, সামনে হাতি দেখে প্রণাম করতে গিয়েছিলেন ওই ভদ্রলোক। তখনই রাগের মাথায় তাঁকে শুঁড়ে করে ধরে আছাড় মারে হাতিটি। বুকে পা তুলে লাথি মেরে সরিয়ে দেয়। যে ঘটনার জেরে ওই ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। আর হাতিটিকে হাজির হয়েছে বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরের হুলা পার্টির সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে একজন আহত হন। পা ভাঙে তাঁর। 


দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালানোর মাঝে বাজারে ভাঙচুরের সময় একটি দোকানে দাঁড়ানো লোকজনের দিকেও তেড়ে যায় হাতিটি। তবে সৌভাগ্যবশত তখন কাউকে আহত করেনি সে। গোটা ঘটনার পরই এলাকায় তৈরি হয়েছে প্রবল আতঙ্ক। একে একে দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছে এলাকায়। এখনও হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় গোটা এলাকাজুড়ে বারবার সতর্কবার্তা দিচ্ছে প্রশাসন।


আরও পড়ুন- মেয়ে রাজ্যের বাইরে, স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে কয়েকদিন ধরে বসে স্বামী ! রবিনসন কাণ্ডের ছায়া হাওড়ার জগাছায়