সৌরভ বন্দ্য়োপাধ্যায়, হুগলি: যাঁকে ঘিরে গোটা জীবন চলেছে এতদিন। তাঁর সঙ্গে যে বিচ্ছেদ হবে তা মেনে নিতে পারেননি। জীবনে নানা ওঠা-পড়া, সুখ-দুঃখের নানা মুহূর্ত যাঁকে ঘিরে কেটেছে, তাঁকে হারিয়ে নিজেকে সামলাতে পারলেন না। স্ত্রীর মৃত্যুর কয়েকঘণ্টা পরেই মৃত্যু হল স্বামীরও। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, উত্তরপাড়ার হিন্দমোটর বিবিডি রোড এলাকায়।
উত্তরপাড়ার হিন্দমোটর বিবিডি রোড এলাকার বাসিন্দা বছর ৫৭-এর প্রণব দাস এবং তাঁর স্ত্রী বছর ৫৪-এর মালঞ্চ দাস। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মালঞ্চ দাস। কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। গতকাল রাত ১২টায় বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মালঞ্চ দেবী। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল, কিন্তু সেখানেই মারা যান তিনি। খবর পেয়ে এসেছিলেন পড়শিরা। তাঁরাই জানাচ্ছেন, স্ত্রীকে এভাবে হারিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মুষড়ে পড়েছিলেন। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আজ সকাল সাতটায় বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন স্বামী প্রণব দাস। তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মারা যান প্রণব দাস। তখনও বাড়িতেই রয়েছে তাঁর স্ত্রীর দেহ। গোটা ঘটনায় শোকের আবহ গোটা এলাকায়।
পড়শিরা জানাচ্ছেন, একে-অপরের পরিপূরক ছিলেন ওই দম্পতি। বিয়ের বয়স পেরিয়েছিল ৩০ বছর। পড়শিরা জানাচ্ছেন, কলেজে পড়াকালীন দুজনের মধ্যে যোগাযোগ। তারপরে প্রেমের সম্পর্কই গড়িয়েছিল বিয়েতে। পাশাপাশি পাড়ারই বাসিন্দা ছিলেন তাঁরা। কয়েক ঘণ্টায় ব্যবধানে পরপর মৃত্যুর ঘটনায় হতবাক পড়শি ও আত্মীয়রা। তাঁদের দাবি, স্ত্রীর মৃত্যুর আঘাত মেনে নিতে না পেরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন প্রণববাবুও।
ওই দম্পতি এক ছেলে রয়েছে, তিনি পড়ুয়া। বাবা-মা কে হারিয়ে কার্যত শোকস্তব্ধ ওই তরুণ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে উত্তরপাড়া শিবতলা ঘাটে দম্পতির দেহ দাহ করা হবে।
আরও পড়ুন: পেশীতে কেন টান ধরে? এই সমস্যা এড়ানোর জন্য কী কী করতে পারেন?