সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: চন্দননগরে গ্রেফতার পাক নাগরিক। ধৃত ফতেমা বিবি ৪৫ বছর ধরে চন্দননগরে থাকেন। ১৯৮০ সালে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছিলেন। তারপর আর ফেরেননি। পুলিশের খাতায় নিখোঁজ ছিলেন।                            

রাওয়ালপিন্ডি থেকে ভারতে এসেছিলেন। গত ৪৫ বছর ধরে চন্দননগর কুঠিরমাঠ এলাকায় থাকতেন ফতেমা বিবি। চন্দননগরে গ্রেফতার পাকিস্তানী নাগরিক। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ১৯৮০ সালে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাবার সঙ্গে ভারতে এসেছিলেন ফতেমা। ১৯৮২ সালে চন্দননগরের এক বেকারি মালিক মুজফফর মল্লিকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তাঁদের দুই মেয়ে। মেয়েদেরও বিয়ে হয়ে গেছে। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের খাতায় ফতেমা নিখোঁজ ছিলেন ভিসা নিয়ে আসার এক বছর পর থেকেই।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ জনের। যার মধ্যে রয়েছেন ২৫ জন পর্যটক। রীতিমতো ধর্ম জেনে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার পর একাধিক কৌশল নিয়েছে ভারত। ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশে ফিরে যেতে বলেছে। যাঁরা পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে রয়ে গেছেন। তাঁদের খোঁজ শুরু হয় নতুন করে। গতকালই চন্দননগরের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় ষাটোর্ধ্ব ফতেমা বিবিকে।                   

চন্দননগরের কুঠির মাঠের পাশে মসজিদের পিছনে মুজফফর মল্লিকের দোতলা বাড়ি। সেই বাড়ি থেকে ফতেমা বিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এতদিন পর একজনকে বিদেশী নাগরিক হিসাবে গ্রেফতার করায় তাঁর প্রতিবেশীরা অবাক। আইনি জটিলতা কাটিয়ে ফতেমার মুক্তি চাইছেন তাঁরা। তাঁর পাকিস্তানে কেউ নেই। যাঁরা আছেন সবাই ভারতে। ফতেমার স্বামী ও মেয়েরা জানান, হুগলির নালিকুলে বাড়ি ছিল ফতেমার পূর্বপুরুষদের। সেখানেই তাঁর জন্ম। পরে কাজের সূত্রে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি চলে যান ফতেমার বাবা ।সেখান থেকেই ৮০ সালে ফের ভারতে আসেন।ষাট বছর বয়স হয়ে গেছে ফতেমার। নানা ধরনের ওষুধ খেতে হয় তাঁকে। ডাক্তার দেখানো হয়েছে হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরিবারের আর্জি, তাঁকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। ফতেমার স্বামী জানান, তাঁর স্ত্রী চন্দননগর কর্পোরেশনের বারো নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। তাঁর আধার, প্যান কার্ড সব আছে। ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এতদিনেও তা হয়নি।