পাণ্ডুয়া: ক্লাস রুমের টিনের ছাউনি ভেঙে গেছে। সেখানে দিয়ে বৃষ্টির জল ঢুকছে ক্লাস রুমে। ছাতা মাথায় দিয়ে শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন। পড়ুয়ারাও ক্লাস করছে ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছে। হুগলির পান্ডুয়া ব্লকের পাঁচপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই বেহাল অবস্থা।
শিশু থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস হয় এখানে। এই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা ৬৮ ও শিক্ষক সংখ্যা ৪। পড়ুয়াদের বসার জন্য ৪টি ক্লাসরুম রয়েছে। দুটি ক্লাস রুমের অবস্থা খুবই খারাপ। মিড ডে মিলের রান্নাঘরে জল থৈ থৈ, ভিজে গেছে রান্নার সব সরঞ্জাম। বৃষ্টির সময়ে পড়ুয়াদের খাওয়ার জন্য কোনও উপযুক্ত ছাউনি পর্যন্ত নেই।
হুগলির অভিভাবক ও বাসিন্দা শেখ ফিরোজ আলি বলেন, 'স্কুলের অবস্থা খুব শোচনীয়। বর্ষার দিনে ক্লাস করতেই পারে না। অন্য ঘরে পড়ুয়াদের ঢুকিয়ে ক্লাস নেন শিক্ষকরা। বৃষ্টির জলে কাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে, বাচ্চাদের তো স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগছে।' স্কুলের বেহাল অবস্থার কথা মেনে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষকও।
পাঁচপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত গুপ্ত বলেন, 'বৃষ্টির সময় ফুটো টিন দিয়ে পড়ুয়াদের গায়ে জল পড়ছিল। এটা জানানোর পর প্রশাসন থেকে ত্রিপল এসেছে। আমাদের দুটো ঘর ভালো, বাকি দুটো ঘর টিনের শেড তার মধ্যে একটা ঘরের অবস্থা খারাপ , সেটাকে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।'
হুগলির স্কুলের বেহাল অবস্থা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, বিজেপি IT সেলের প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। হুগলির স্কুলে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের ছাতা মাথায় ক্লাসরুমে বসে থাকার ছবি পোস্ট করে এটাই পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'শিক্ষা মডেলের' দুঃখজনক বাস্তবতা। হুগলিতে ৫ থেকে ১০ বছর বয়সের ৬৮ জন পড়ুয়াকে ক্লাসরুমে ছাতা ধরে বসতে বাধ্য করা হচ্ছে কারণ, তাদের স্কুলের ভাঙা ছাদ দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ছে। কোথায় স্কুলের অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামোর জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে? কোথায় বহুল প্রচারিত 'বাংলার শিক্ষা মডেল'? যখন রাজ্য সরকার তুষ্টিকরণের প্রচার আর ছবি তোলায় ব্যস্ত, তখন পশ্চিমবঙ্গের শিশুদের এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিধ্বস্ত ব্যবস্থা, মর্যাদা নেই, সাধারণ সুবিধাটুকু নেই। এটা কোনও প্রশাসন নয়, এটা অপরাধমূলক অবহেলা।