হুগলি: আশা-আশঙ্কার পেন্ডুলামে গত ১৭ দিন কেটেছে কোনও মতে। অবশেষে, আজ সন্ধেয় সুস্থ অবস্থায় (Uttarkashi Tunnel Resuce) সুড়ঙ্গ থেকে বেরোন ছেলে। তবু যেন ঘোর কাটছে না হুগলির বাসিন্দা, জয়দেব প্রামাণিকের (Hooghly Jaydev Pramaik Rescue) মায়ের। আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার জয়দেবের মাকে মিষ্টিমুখ করাতে এসেছিলেন। খানিকটা সম্বিৎ ফিরলেও গত ১৭ দিনের দুঃসহ মুহূর্তগুলির ঘোর যেন এখনও পুরোপুরি কাটেনি। তবে জয়দেবের পরিবারের বাকি সদস্যদের মধ্যে খুশির হাওয়া, স্বস্তির মেজাজ। ১৭ দিনের যুদ্ধ শেষে অক্ষত বেরিয়েছেন বাড়ির ছেলে।
যা জানা গেল...
সংবাদমাধ্যমের সামনে আরও কিছুটা কুণ্ঠিত দেখাচ্ছিল জয়দেবের মাকে। তার মধ্যেই বললেন, 'জয়দেবের দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে...ছেলে একদম সুস্থ রয়েছে।' তাঁর কথায়, 'ভিডিও কল করেছিল। জামাইবাবুর সঙ্গে হাত ধরে ঘুরছিল। 'হাই' করেছে ভিডিওয়।' তবে মা-র সঙ্গে কথা হয়নি, হয়েছে দিদির সঙ্গে। তাতে কী? ছেলে ভালো আছে, সুস্থ আছে জেনে অনেকটাই নিশ্চিন্ত মা। গত কয়েকদিন ধরে ভালো করে খাওয়াদাওয়া পর্যন্ত করেননি। আজ সন্ধেয় জয়দেবের উদ্ধারের খবর এলে সমস্ত উৎকণ্ঠা, চিন্তা কমে যায়। তবে এখনও কিছুটা আড় রয়েছে মা-র মনে। যতক্ষণ পর্যন্ত ঘরের ছেলে ঘরে না ফেরে, ততক্ষণ পর্যন্ত কি পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছে না মায়ের মন?
আরও যা...
উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা থেকে বারকোটের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে যে ৪১ জন শ্রমিক আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বাংলার ৩ জন ছিলেন বলে জানা যায়। এই তিন জনের মধ্যে মধ্যে ২ জনের বাড়ি হুগলির পুরশুড়ায়। এই দুই যুবকের মধ্যে একজন হলেন পুরশুড়ার হরিণাখালি গ্রামের বাসিন্দা সৌভিক পাখিরা। অপরজন নিমডাঙ্গির বাসিন্দা জয়দেব প্রামাণিক। অন্যদিকে, কোচবিহারের বলরামপুরের মানিক তালুকদারও আটকে পড়েছিলেন সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে। আজকের পর সকলের বাড়িতেই স্বস্তির পরিবেশ। ছেলে সৌভিক পাখিরার সঙ্গে যেমন এদিন উদ্ধারের পরই কথা বলেন মা। জিজ্ঞাসা করেন, 'চেক আপ করিয়েছো তো?' ঘরের ছেলের উদ্ধারের খবরেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন হুগলির হরিনাখালির মানুষ। এবার মোবাইলে গলার আওয়াজ পেয়ে তাঁদের মধ্যে উৎসাহের জোয়ার। কেউ বলছেন, 'আমরা সকলে এখানেই আছি, কথা শুনছি। তাঁদের মধ্যেই কেউ কেউ আবার জানতে চালেন জয়দেব কেমন রয়েছেন?' জয়দেব অর্থাৎ জয়দেব প্রামাণিক। মোবাইলের ও পার থেকে কী উত্তর এল শোনা যায়নি ঠিকই। তবে মুখের হাসি অটুট রেখে পাল্টা প্রশ্ন মায়ের, 'সকলকে একসঙ্গেই বের করেছে?' তিনিই উদগ্রীব পড়শিদের জানালেন, জয়দেব রয়েছেন সৌভিকের সঙ্গেই। দু'জনে একসঙ্গেই হাসপাতালের দিকে রওনা দিয়েছেন। পাড়াপড়শিরা সকলেই চান, সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন ওঁরা।
আরও পড়ুন:'আমাদের দেখে জড়িয়ে ধরেছিলেন', শ্রমিকদের উদ্ধার করে খুশির হাসি উদ্ধারকারীদের মুখে