একদিকে ব্রিটিশ(british), অন্যদিকে পর্তুগিজ (portuguese)। কোথাও আবার ফরাসি (french) তো কোথাও ডাচ (dutch)। হুগলি (hooghly) জেলার আনাচকানাচে এমন একাধিক উপনিবেশের-ইতিহাস (history) আজও যেন জীবন্ত। কলকাতা থেকে মাত্র ৪৭ কিলোমিটার উত্তর দিকে এগোলেই ছোঁয়া যায় সেই ইতিহাসকে। ১৫৩৭ সালে পর্তুগিজরাই প্রথম এখানে উপনিবেশ গড়ে। কিন্তু পরে শাহজাহানের হাতে পরাজিত হয় তাঁরা। সেটা ১৬৩২ সাল। তার পর ১৬৫১ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একটি কারখানা তৈরি করে হুগলিতে। আসে ফরাসিরাও। চন্দননগরের অলিগলিতে ফরাসি উপনিবেশের গন্ধ আজও লেগে রয়েছে। অন্য দিকে চুঁচুড়ায় আবার ১৬৫৬ থেকে ১৮২৫ পর্যন্ত ঔপনেবেশিক শাসন চালায় ডাচরা। হুগলি নদীর কিনারায় আজও ডালপালা মেলে বসে রয়েছে এই সব ইতিহাসের নির্দশন।


কী দেখবেন?
তালিকা দীর্ঘ। ছোট-বড় মিলিয়ে দেখার জায়গা নেহাৎ কম নয়। অল্প সময়ে বেড়াতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এই জায়গাগুলিতে...


ইমামবাড়া:
চুঁচুড়ায় হুগলি নদীর পাড়ে দোতলা এই স্থাপত্য দেখতে যে কোনও দিন বেরিয়ে পড়তেই পারেন। ইতিহাস বলছে, ১৮৪১ সালে এই স্থাপত্য তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, শেষ হয় ১৮৬১ সালে। একাধিক ঘর রয়েছে হুগলি ইমামবাড়ায়। এমনিতে ট্রেনের মাধ্যমে সহজেই পৌঁছনো যায়। সবচেয়ে কাছের স্টেশন ব্যান্ডেল। তা ছাড়া কলকাতা থেকে সড়কপথে যাওয়ারও একাধিক উপায় রয়েছে।


ডাচ গোরস্থান...
ইতিহাসের সাক্ষী এই জায়গায় বহু মানুষের কবর রয়েছে। এএসআই সংরক্ষিত গোরস্থানটির সবচেয়ে পুরনো কবরটির ১৭৪৩ সালের। তুলনায় নতুনতম ১৮৪০ সালের।


চন্দননগর...
১৬৭৩ সালে ফরাসি উপনিবেশ হিসেবে গড়ে ওঠে এই শহর। হুগলি নদীর উপর দিয়ে বাণিজ্য করার জন্য বাংলার তৎকালীন নবাব ইব্রাহিম খানের থেকে চন্দননগর তৈরির অনুমতি নিয়েছিল ফরাসিরা। আজও নিজস্ব সংস্কৃতি ও ধারা বহন করে চলেছে প্রাক্তন এই ফরাসি উপনিবেশ।


পাণ্ডুয়া...
মূলত মিনারের জন্যই খ্যাতি পাণ্ডুয়ার। ১২৫ ফুটের মিনারটি আনুমানিক তেরোশো শতকের। পান্ডু রাজার প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষও এখানকার অন্যতম দেখার জায়গা।


কামারপুকুর...
শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান হিসেবে দেশ তো বটেই, বিশ্বেরও বহু জায়গায় কামারপুকুর অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এখানে আসেন। 


ব্যান্ডেল চার্চ...
'দ্য ব্যাসিলিক অফ হোলি রোসারি' বা সংক্ষেপে ব্যান্ডেল চার্চ গোটা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন গির্জাগুলির অন্যতম। ১৯৮৮ সালের ২৫ নভেম্বর পোপ দ্বিতীয় জন পল এটিকে 'মাইনর ব্যাসিলিকা' হিসেবে ঘোষণা করেন। হুগলির অন্যতম দর্শনীয় স্থান এটি।


কী ভাবে পৌঁছবেন...
দর্শনীয় জায়গাগুলিতে পৌঁছতে হলে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন পরিষেবা রয়েছে। তা ছাড়া কলকাতা থেকে সড়কপথে যাওয়ারও একাধিক উপায় রয়েছে। আকাশপথে পৌঁছতে হলে সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। 


আরও পড়ুন:কান পাতলে উঠে আসে পুরাণ-ইতিহাস, শহর থেকে কিছু দূরে, দঃ দিনাজপুরের এই জায়গাগুলি না দেখলেই নয়