সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুঁচুড়া: পুলিশের (police) প্রিজন ভ্যান (prison van) থেকে নামতে গিয়ে হামলা (shootout) চলেছে তার উপর। এবার তাই আর 'ঝুঁকি' (risk) নিতে চাইল না চুঁচুড়ার (chinsurah) কুখ্যাত দুষ্কৃতী (gangster) টোটন বিশ্বাস গ্যাংয়ের লোক জন। পুলিশের দাবি, এদিন এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল থেকে টোটনকে গার্ড দিয়ে চুঁচুড়া নিয়ে আসার সময় টোটোনের গ্যাংয়ের কিছু যুবকও (gang members) কনভয়ের পিছু নিয়েছিল। কনভয়টি ডানকুনি থেকে দিল্লি রোডে ওঠার পর চন্দননগর পুলিশ ওই গ্যাং সদস্যদের আটকায়। 


কী হয়েছে?
পুলিশের উপর 'ভরসা' নেই। তাই টোটনের নিরাপত্তায় তার গ্যাংয়েরই কিছু যুবক কনভয়ের পিছু নেয়। তবে ডানকুনি থেকে দিল্লি রোডে ওঠার পর চন্দননগর পুলিশ সেই সদস্যদের আটকেছে। তাদের রাস্তার পাশে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে হাত মাথার পিছনে দিয়ে তল্লাশি করা হয়। দেখা যায়, ডায়রিতে প্রত্যেকের নাম লিখছে পুলিশ। শুধু তাই নয়। পিস্তল হাতে পাহারায় থাকেন পুলিশ অফিসাররা। সূত্রের খবর, তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও কয়েক রাউন্ড কার্তুজ পাওয়া গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, টোটোন যখন বাইরে ছিল তাকে সব সময় চল্লিশ-পঞ্চাশ জনের একটি দল ঘিরে থাকত। হামলার হাত থেকে বাঁচাতেই ওই ভাবে আড়াল করে রাখা হত তাকে, খবর সূত্রে।


যা ঘটেছিল...
গত ৬ আগস্ট প্রিজন ভ্যান থেকে নামার পথে টোটন বিশ্বাসকে লক্ষ্য করে গুলি চলেছিল চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে। ওই হামলায় গুলি লাগে টোটনের। দ্রুত অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। স্থানীয়দের একাংশরা জানান,এলাকায় রীতিমতো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম ছিল টোটনের। খুন-সহ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ওই দিন আদালতে তোলার আগে দুপুর ১২টা নাগাদ ওই দুষ্কৃতীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। সঙ্গে আরও কয়েক জন বন্দি ছিল। হঠাৎ গুলি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রিজন ভ্যান থেকে টোটন যখন নামছে তখনই গুলি চালানো হয়। সম্ভবত রোগীর পরিজন সেজেই হাসপাতাল চত্বরে আগে থেকে বসে ছিল হামলাকারীরা। আচমকা হামলায় ইমামবাড়া হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়ায়, প্রিজন ভ্যানে বসে থাকা বাকিদের চোখেমুখেও তখন ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। খবর পুলিশ সূত্রে। মুহূর্তের মধ্যে হাসপাতাল চত্বরের ছবিটা পাল্টা যায়। হুড়োহুড়ি, চিৎকার-চেঁচামেচি। বন্ধ হয়ে যায় জরুরি বিভাগের গেট। পুলিশ জানিয়েছে, গুলি লেগেছে টোটনের। তাকে সোজা হাসপাতালের ভিতর অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। গণ্ডগোলের মাঝে পালায় হামলাকারীরা। ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি এলাকাদখলের লড়াই, কী থেকে রক্তপাত, সেটাই বুঝতে তদন্ত শুরু করেন চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। হামলাকারীদের সন্ধান পেতে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। কিন্তু যে ভাবে পুলিশের প্রিজন ভ্যানেই হামলা চলেছিল তাতে কিছুটা হলেও আতঙ্ক ছড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। 


আরও পড়ুন:অনুব্রত-র ব্যক্তিগত দেহরক্ষীদের বের করে দেওয়া হল বাইরে, ঘরে ঢুকে তালা দিল সিবিআই