অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়: উত্তরপাড়ায় হিন্দুস্তান মোটর্সের (Hindustan Motors) বন্ধ কারখানার জমি অধিগ্রহণ করল রাজ্য সরকার (State Government)। সেই কাজের জন্য কারখানায় যায় প্রচুর পুলিশ। যদিও, কিছুক্ষণ সেখানে থাকার পর তারা ফিরে যায়। 


হিন্দমোটরে অধিগ্রহণ প্রস্তুতি


মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, শিল্প না করে ফেলে রাখলে, আইনে পরিবর্তন এনে, সেই জমি অধিগ্রহণ করা হবে। সেই মতো, হুগলির উত্তরপাড়ায়, হিন্দুস্তান মোটর্সের বন্ধ
কারখানার জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেও মঙ্গলবার শেষ মুহূর্তে সেই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখল রাজ্য সরকার। 

৯ নভেম্বর হিন্দুস্তান মোটরের জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, বেঙ্গল শ্রীরাম ও টিটাগড় ওয়াগনকে জমি বিক্রির পর হিন্দুস্তান মোটর্সের হাতে থাকা ৩৯৫ একর জমি অধিগ্রহণ করবে রাজ্য সরকার। কলকাতা পুরসভার পুরমন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'সরকারের জমি। কেউ শিল্প না করে ফেলে রাখলে সরকার অধিগ্রহণই করে। এতে আর নতুন কী আছে!' মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ বন্ধ কারখানার ভিতরে পৌঁছে যায় পুলিশ।

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এদিন সকাল সাড়ে ১০টা-১১টা নাগাদ সরকারি আধিকারিকদেরও সেখানে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়। ঢোকার সাড়ে ৩ ঘণ্টার মাথায় বন্ধ কারখানা চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যায় পুলিশ। বিকেলে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে শ্রীরামপুরে এসডিও অফিসে একটি বৈঠক করে প্রশাসন। হুগলির জেলাশাসক জানিয়েছেন, কারখানার জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই জমিতে সরকারি বোর্ড লাগানো হবে।


স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর স্বাবলম্বী ভারতের অন্যতম উড়ান শুরু হয়েছিল হুগলির উত্তরপাড়ার এই কারখানা থেকে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় অ্যাম্বাসাডর কারখানা। কারখানা তৈরির জন্য হিন্দুস্তান মোটর্সকে প্রায় ৭৪৪ একর জমি দিয়েছিল তৎকালীন রাজ্য সরকার। কিন্তু হিন্দমোটরের গৌরব চিরস্থায়ী হয়নি। ২০১৪ সালে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় কারখানা। তারপর থেকে ৮ বছর ধরে তা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, 'বিধান রায়ের আমলে জমি লিজে দেওয়া হয়েছিল। এখন সেই কারখানা ধ্বংস স্তূপ। শিল্পের জন্য জমি নিয়ে ফেলা রাখা যাবে না। শিল্পই করতে হবে, সেই কাজটাই মুখ্যমন্ত্রী করছেন।'

হিন্দুস্তান মোটর্সের সিটুর সহ সভাপতি মণীন্দ্র চক্রবর্তীর কথায়, 'ডানলপের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা হয়েছিল। কী হয়েছে সবাই জানে। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন তার আগে অধিগ্রহণের চমক দেখিয়ে বাজার গরম করার চেষ্টা।' 


আরও পড়ুন: Kharagpur Municipality: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে অভিষেককে চিঠি, ক্ষুব্ধ তৃণমূলের ২১ কাউন্সিলর

হিন্দমোটরের বিজেপি নেতা পঙ্কজ রায় বলেন, 'শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ কী তা নিয়ে কথা নেই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা।' হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কারখানা এলাকায় বসবাসকারী কাজ হারানো শ্রমিকদের বিকল্প ঠিকানা সুনিশ্চিত করে, তারপরই এবিষয়ে এগোন হবে।