সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: এই বয়সে অনেকের চলে যায় স্মৃতি। অনেকে কথা বলতে পারেন না। অনেকেই পারেন না হাঁটতে। বার্ধক্য হয়ে দাঁড়ায় তখন অভিশাপের মতো। এক জীবনে তো কত পর্যায়ের সাক্ষী থাকতে হয় মানুষকে। চলার পথে বারবার বদলে যায় প্রেক্ষাপট। পাশের কুশিলবেরা। দীর্ঘ জীবন যেন একটা সময়ের দলিল। কত কিছুর সাক্ষী হয়ে রয়ে যেতে হয় এক জীবনে। শতায়ু পেরিয়েও রেহাই নেই। ১০৫ বছরে সাক্ষী দিতে আদালতে এলেন হুগলির ( Hooghly News ) এক বৃদ্ধ । বয়স তার ১০৫। 


সম্পত্তির টানাপোড়েনে বহু মানুষকেই আদালতের চৌকাঠ পেরোতে হয়। বিশেষত সম্পত্তি ভাগ যে কত পরিবারকে কত তিক্ত বাস্তবের মুখে দাঁড় করায় তা বলাই বাহুল্য । এ হেন এক সম্পত্তি ভাগের মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিলেন শতায়ু পার করা এক বৃদ্ধ। মঙ্গলবার চুঁচুড়া জেলা আদালতে (CHINSURAH DISTRICT COURT  )  দ্বিতীয় সিভিল জজ সিনিয়র ডিভিশনের ঘরে  তাঁকে দেখতেই জড়ো হয়ে যান কত মানুষ। 


নাম কালীকুমার বসু। হাতের জোর নেই। কাঁপে । গলার  স্বরও ক্ষীণ। এককালে কাজ করতেন রেলে।  অবসরপ্রাপ্ত কর্মী কালীকুমার বসুর জন্ম ১৯১৯ সালে। পোলবা থানার মেরিয়া গ্রামে। ২০১৭ সাল থেকে সম্পত্তি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে মামলা চলছিল কালীবাবুর। বয়স বেড়েছে। শরীর জবুথবু হয়েছে। তবু মানসিক জোর দেখার মতো। অন্যায় মেনে নেবেন না। 


এই বৃদ্ধর উকিল বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী জানান, কালীবাবুর সম্মতি ছাড়া শরিকরা সম্পত্তির কিছুটা অংশ বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আইন অনুযায়ী শরিকি সম্পত্তি বিক্রি করতে গেলে সম্পত্তির সব শরিকদের অনুমতি নিয়ে হয়। কারও আপত্তিতে এই কাজ হলে, তিনি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। 


মামলাকারীর যুক্তি ঠিক হলে, সেই সম্পত্তি পুনরায় ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।  মামলা চলছে অনেকদিন ধরে।  কালীবাবুর সাক্ষ্যও প্রয়োজন ছিল এই মামলায়। তাই বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই আইনি লড়াই লড়তে আদালতে আসেন। দেন সাক্ষ্য।  সঙ্গে ছিলেন নাতি। আইনজীবী জানান, সাক্ষ্য গ্রহণ ভালভাবেই হয়েছে । এখন ১৬ তারিখ মামলার চূড়ান্ত রায় জানা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।  


আদালতের রায় যাই হোক না কেন, মঙ্গলবার থেকেই সকলের কথার বা আলোচনার কেন্দ্রে ১০৫ বছরের ওই বৃদ্ধ। 


আরও পড়ুন :


'লকেট চট্টোপাধ্য়ায়কে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না', পোস্টার দিলেন 'BJP কর্মী'রাই