সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: রেলের মতো এবার শ্মশানেও তৎকাল পরিষেবা। দ্বিগুণেরও বেশি টাকা দিলে দ্রুত সত্কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে হুগলির ত্রিবেণী শ্মশানে। বাঁশবেড়িয়া পুরসভার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। প্রশ্নের মুখে হুগলির তৃণমূল পরিচালিত বাঁশবেড়িয়া পুরসভা। গঙ্গা, সরস্বতী ও কুন্তী নদীর সঙ্গমে ত্রিবেণী শ্মশান। প্রতিদিনই সৎকারের জন্য লম্বা লাইন পড়ে। এই পরিস্থিতিতে মাস চারেক আগে চালু হয়েছে তৎকাল পরিষেবা।


শ্মশানে 'তৎকাল'


বৈদ্যুতিক চুল্লিতে যেখানে সাধারণভাবে সৎকার করতে খরচ হয় ১২০০ টাকা, সেখানে তত্কালের খরচ দ্বিগুণেরও বেশি। দ্রুত পরিষেবা পেতে গুণতে হয় ৩ হাজার টাকা। সত্কারের কাজে হয়রানি এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত, দাবি শ্মশান কর্তৃপক্ষের। ত্রিবেণী শ্মশানের কর্মী সোমনাথ শীল বলেন, "অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে আসে। দেহ পোড়াতে একদিন কেটে যায়। তাই কারও যদি তাড়াহুড়ো থাকে, তাহলে এই সুবিধা নিতে পারে।" অর্থাৎ বেশি টাকা দিলেই দ্রুত সত্কার করা যাবে। বাঁশবেড়িয়া পুরসভার এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এলাকার বাসিন্দাদের। 


এদিকে বাসিন্দাদের তরফে বলা হয়েছে, কোনও জরুরি প্রয়োজনে তৎকাল পরিষেবা ভালো। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে নয়। এতে গরিব বড়লোকের পার্থক্য করা হচ্ছে। অর্থের লেনদেন দুর্নীতিও হতে পারে।


আরও পড়ুন, স্কুলে নিয়োগ নিয়ে ১২০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, চাঞ্চল্যকর দাবি ED-র আইনজীবীর


রাজনৈতিক তরজা


এদিকে এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা বিজেপির। যদিও হয়রানি এড়াতে তত্কাল পরিষেবা চালু হয়েছে এমনটাই তৃণমূলের দাবি। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুবীর নাগ বলেন, "বাংলায় বেশি পয়সা দিলেই সুবিধা মেলে। পয়সা না দিলে নয়। সে চাকরি হোক বা জন্মের শংসাপত্র। মরলেও পয়সা দিলে পরিষেবা আগে মেলে। তার মানে মরেও শান্তি নেই। অন্যদিকে, বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন এবং  তৃণমূল নেত্রী শিল্পী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "প্রচুর ভিড় হয়। ২টো ইলেকট্রিক চুল্লি। ২টো একসঙ্গে চললে ব্রেক ডাউনের আশঙ্কা। তাই একটাকে স্পেশাল রাখা হয়েছে। যারা অপেক্ষা করতে পারে না। তারা এই পরিষেবা নিতে পারে।" 


পুরসভা সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা বললেও, সত্কারে তত্কাল পরিষেবা নিয়ে চরমে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।