প্রকাশ সিনহা, পার্থপ্রতিম ঘোষ ও সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা: স্কুলে (School) নিয়োগ নিয়ে ১২০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। আরও ১০০ কোটি উদ্ধার করতে হবে। আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন ED-র আইনজীবী। তিনি আরও দাবি করেন, প্রাথমিক (Primary) থেকে SSC, নিয়োগ দুর্নীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। মন্ত্রী ও অর্পিতা (Arpita Mukherjee) একসঙ্গে জমিও কিনেছিলেন বলে দাবি ED-র। 


ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে ED। কিন্তু এ কি হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এই প্রেক্ষাপটেই সোমবার আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আইনজীবী। স্কুলে নিয়োগ নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। ২০ কোটি নয়, ১২০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। আরও ১০০ কোটি টাকা উদ্ধার করতে হবে। সোমবার আদালতে এই দাবি করলেন তিনি।


রবিবার আদালতে ইডি-র আইনজীবী বলেছিলেন, একটা পেঁয়াজ পাওয়া গেছে। খোসা যত ছাড়ানো হবে, ততই তথ্য বেরোবে। আর এদিন আদালতে বিস্ফোরক দাবি করল ED। এদিন ED-র তরফে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল সূর্যপ্রকাশ ভি রাজু দাবি করেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে গ্রুপ ডি কর্মীর প্রচুর পরিচয়পত্র এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের নথি উদ্ধার করা হয়েছে। তা থেকেই স্পষ্ট হয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুধুমাত্র গ্রুপ-ডি ও SSC-র নিয়োগ দুর্নীতিতে নন, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত। 


আরও পড়ুন, হুমকি দিয়েছেন পার্থ, আদালতে দাবি ইডির আইনজীবীর


২০ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধারের পরই, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি গ্রেফতার হয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এরপর থেকেই দু-জনের সম্পর্ক নিয়ে নানা মহলে নানা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছে। এই প্রেক্ষাপটেই তাঁদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল। 


আদালতে তিনি দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অর্পিতা। দু-জনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। মন্ত্রীর বাড়ি থেকে অর্পিতার বেশকিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। এমনকী তল্লাশি অভিযানে ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারির একটি দলিল মিলেছে, যা থেকে জানা গেছে তাঁরা দু’জনে মিলে একটি জমি কিনেছিলেন। দু’জনে নিয়মিত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখতেন। দু-জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার প্রয়োজন আছে বলে জানান ED-র আইনজীবী।


যদিও পাল্টা দাবি করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীও। নিজের উদাহরণ টেনে ধরে দাবি করেন, আমি আমার জুনিয়রকে ফোন করতেই পারি। তার মানে এই নয় যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সব মিলিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি ঘিরে বাইরে যখন জোর বাগযুদ্ধ, তখন আদালতে তুঙ্গে আইনি যুদ্ধ।