সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর : করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে শঙ্কা। আতঙ্ক। পুজো মণ্ডপে এবছরও ঢুকলে পারবেন না দর্শনার্থীরা, জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু আইনি বাধা নিষেধ, চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা, এতকিছুর পরেও মানুষের বাঁধনছাড়া উল্লাসে ঘাটতি নেই।  পুজোর আগে শেষ রবিবার কেনাকাটি করার ভিড় উপচে পড়ল বিভিন্ন বাজারে। কলকাতা শহর থেকে শহরতলি, সবজায়গায় চোখে পড়ার মতো ভিড়। 


গত সপ্তাহে টানা ঝড়-বৃষ্টিতে পুজোর কেনাকাটা হয়নি বললেই চলে। বৃষ্টি-কাঁটায় মাথায় হাত পড়ে যায় ব্যবসায়ীদের। শনি-রবিবার শরৎ-রোদের লুকোচুরিতে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আর ক্রেতারা ? করোনা আতঙ্ক ভুলে রীতিমতো ঠেলাঠেলি করে পুজো শপিং শুরু করে দেন।  উপচে পড়ে শ্রীরামপুর বাজার ।  বেশির ভাগের মুখে দেখা গেল না মাস্ক। দূরত্ববিধি প্রায় উধাও।  তাই সকলকে সতর্ক করতে নেমে পড়ে পুলিশ - প্রশাসন। পুজোয় করোনা সংক্রমণ রুখতে  শ্রীরামপুর পৌরসভা ও চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ ক্রমাগত মাইকিং চালায়। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে বারবার করে মাস্ক পরতে বলা হয়। যাঁদের মাস্ক নেই, তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দেয় পুলিশ।  কিন্তু তা সত্ত্বেও কারও অজুহাত, গরম লাগছে, তো আরেকজনের অজুহাত... যাঃ বাড়িতে মাস্ক ফেলে এসেছি ! 


শ্রীরামপুর পৌরসভার পৌরপ্রশাসক গৌরমোহন দে নিজেও মাইকে সতর্কবার্তা প্রচার করেন। তিনি বলেন, করোনা যেন দুর্গা পুজোয় কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায় ।  এছাড়াও পুজোর কয়েকদিন কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে প্রশাসন। পৌরসভায় করোনা বিধি মেনে, হাইকোর্টের নির্দেশ মতো আবেদন পত্র জমা দিলে তারপরই মিলবে ছাড়পত্র। 


তবে স্বস্তির কথা এটাই, রবিবারে বেশ কিছুটা কমল দৈনিক করোনা সংক্রমণ। শনিবারে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল একদিনে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। সেই তুলনায় বেশ কিছুটা কমেছে সংক্রমণ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৭০১ জন। রবিবার এই সংখ্যা ছিল  ৭৬১ জন। শুক্রবার আক্রান্ত হয়েছিলেন ৭০৮ জন।  এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৭১ হাজার ২৪০। একদিনে রাজ্যে করোনা মুক্ত হয়েছে ৬৮৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। রবিবার রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন। শুক্রবার মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। এ নিয়ে রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৮,৮২৫ জন। রাজ্যে এখন করোনা অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৭ হাজার ৫৮৭।