সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈঁচি : স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারকে সম্মান জানানোর বিশেষ উদ্যোগ কেন্দ্রের। হুগলির বৈঁচি গ্রামের দুই স্বাধীনতা সংগ্রামী- প্রণব কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামকৃষ্ণ বসুর ভিটে থেকে মাটি সংগ্রহ করল ভারতীয় সেনা।


কীসের উদ্যোগ ?


১৯৪২ সালে হয়েছিল 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলন। যে আন্দোলনের জেরে অত্যাচারী ইংরাজ শাসকের ভিত নড়ে গিয়েছিল। সেই সময় স্বাধীনতা আন্দোলনে যাঁরা বীর সেনানী ছিলেন তাঁদের সম্মান জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার। নেহেরু যুব কেন্দ্রের মাধ্যমে 'মেরি মাটি মেরা দেশ' স্লোগানকে সামনে রেখে বীর সেনানীদের পরিবারবর্গকে সম্মান জানানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে দিল্লিতে অমৃত বটিকা তৈরির জন্য বীর সেনানীদের পুণ্য ভূমি থেকে মাটি সংগ্রহ করার কথা জানিয়ে চিঠি আসে দিন দু'য়েক আগে। সেইমতো আজ আসেন BSF-এর ছয় জওয়ান। হুগলির বৈঁচি গ্রামের এমনই দুই স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রণব কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামকৃষ্ণ বসু। তাঁদের ভিটে থেকে মাটি সংগ্রহ করে ভারতীয় সেনা। বৈঁচি গ্রামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বীর সেনানীদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে সম্মান জানান BSF-এর কমান্ডার।


১১৮ ব্যাটেলিয়নের BSF কমান্ডার গণেশ দত্ত গৌতম বলেন, "দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পুণ্যভূমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে অমৃত বাটিকা তৈরিতে সেই মাটি ব্যবহার করা হবে। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ১৯৪২ সালের 'কুইট ইন্ডিয়া ' মুভমেন্ট বা 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনের বিশেষ ভূমিকা ছিল। তাই সেই সময় যাঁরা এই আন্দোলন করেছিলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে জেল খেটেছিলেন তাঁদের পরিবারকে এভাবে সম্মান জানাতে উদ্যোগ নিয়েছে দেশের সরকার।


প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'গান্ধীজির নেতৃত্বে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বাবা। তৎকালীন ইউনিয়ন বোর্ডের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রণব কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামকৃষ্ণ বসু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। প্রথমে হুগলি জেল, তারপর প্রেসিডেন্সি জেল, আলিপুর জেলে কারাবাস করে ১৯৪৪ সালে ছাড়া পান। ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী বাবাকে তাম্রপত্র দিয়ে সম্মান জানিয়েছিলেন।'


প্রসঙ্গত, প্রথা মেনে এবারও ১৫ অগাস্ট লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণ দেবেন জাতীর উদ্দেশে। আর এসব কিছু হবে ১৮০০ 'বিশেষ অতিথি'-র উপস্থিতিতে। সরকারের 'জন ভাগিদারি' উদ্যোগের অংশ হিসাবে। যাতে জনগণ প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত হতে উৎসাহ বোধ করেন। 


লাল কেল্লায় 'বিশেষ অতিথি' হিসাবে আমন্ত্রিত থাকছেন- গ্রামের সরপঞ্চ, কৃষক উৎপাদনকারী সংগঠন প্রকল্পের প্রতিনিধিরা, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার উপভোক্তা, সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের নির্মাণকর্মীরা, খাদি কর্মীরা এবং সীমান্তের রাস্তা নির্মাণের কাজে যাঁরা যুক্ত, অমৃত সরোবর ও হর ঘর জল যোজনার কর্মীরা এবং প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক, নার্স ও জেলের থাকছেন এই তালিকায়।