বলাগড় : ফের টাকার বিনিময়ে টিকিটের অভিযোগ, এবার হুগলির বলাগড়ে। তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে প্রার্থী করার অভিযোগ উঠল। অভিযোগ তুলল তৃণমূল কর্মীদেরই একাংশ। প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল ব্লক সভাপতি। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল বিধায়ক পাল্টা দাবি করেছেন, 'একুশের ভোটে যাঁরা জিততে সাহায্য় করেছিলেন তাঁদেরই টিকিট দিয়েছেন।'
ব্লক তৃণমূল সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "বিজেপির বুথ সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন, অনেক ক্রিমিনাল প্রার্থী হয়ে গেছে। অজান্তে হয়েছে কি না জানি না। কারণ, আমি যে প্যানেল দিয়েছিলাম, পুরোটাই একদম নিচুতলায় বুথ লেভেলে বসে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছিল। বিধায়ক সাহেব তো কোনও দিন নির্বাচনের ময়দানে ছিলেন না। নির্বাচন সম্বন্ধেও জানেন না। পঞ্চায়েত নির্বাচনটা একটা অন্য আঙ্গিকে হয়, অন্য জায়গায় দাঁড়িয়ে হয়। দলকে বিষয়টা জানিয়েছি। আশা করছি, এর সুরাহা করবে। "
যদিও মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলছেন, "ভোটের সময় যাঁরা আমার হয়ে কাজ করেছিলেন, সেই মানুষগুলো যাতে বঞ্চিত না হন। তাঁদের বঞ্চনা করার জন্য একটা আপ্রাণ প্রচেষ্টা চলছিল। তাই অনেক চেষ্টা করে, ৯০টা মাত্র সিট তাঁদের জন্য আদায় করতে পেরেছি। বাকি সমস্তই ব্লক সভাপতি টিকিট দিয়েছেন। আমি যেখানে প্রার্থী দিয়েছি, ব্লক সভাপতি সেখানেও অন্য প্রার্থীদের নমিনেশন করিয়ে দিয়েছেন। ইনি প্রত্যেকের কাছে উৎকোচের বিনিময়ে টিকিট দিয়েছেন।"
অভিযোগ অন্যত্রও-
১০ লাখ টাকায় পঞ্চায়েতে তৃণমূলের টিকিট বিক্রি করছেন বিধায়ক। টিকিট দেওয়ার টোপ দিয়ে ৩ বছর ধরে সংগঠনের কাজ করিয়ে টাকাও নিয়েছেন। বিধায়কের বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সপ্তাহখানেক আগে তৃণমূল ছেড়ে আইএসএফে যোগ দেন কুলপির শতাধিক কর্মী, সমর্থক। দলবদলের পরেই তৃণমূলের অঞ্চল অফিস দখল করে নেয় আইএসএফ। যদিও মিথ্য়ে অভিযোগ বলে পাল্টা দাবি করে তৃণমূল।
বাঁকুড়ায় রেটচার্ট বেধে পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বিক্রির অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পথে নামে তৃণমূল! আর দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে, ১০ লক্ষ টাকায় পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠল খোদ তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে! আর এই অভিযোগেই, কুলপির কামারচক গ্রাম পঞ্চায়েতের চকতারাবৈদ্য গ্রামে তৃণমূল ছেড়ে ISF-এ যোগ দেনন প্রায় শ-খানেক কর্মী। দলবদলের পরই, তৃণমূলের পার্টি অফিসেরও দখল নিল নৌশাদ সিদ্দিকির দল।
তৃণমূল-ত্যাগী কর্মীরা দাবি করেন, লক্ষ লক্ষ টাকায় পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রি করেছেন কুলপির তৃণমূল বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার। অভিযোগ, টিকিট দেওয়ার টোপ দিয়ে, ৩ বছর ধরে সংগঠনের কাজ করিয়েও টাকা তুলেছেন তিনি।
কুলপির তৃণমূল বিধায়ক অবশ্য, পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রির অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমাদের এখানে এ রকম কিছু ঘটনা ঘটে না। সব সাংগঠনিকভাবে হয়। কেউ আমাদের দলের লোক নয়। দলের লোক হলে কী আর এ রকম বলে কেউ? এ রকম বলতে পারে না। আমাদের দলের কেউ নয়। ওরা বিরোধী ছিল। বিধানসভার সময়ে আইএসএফ করেছে। এখন ভোটের সময়েও নতুন করে এইটা দেখাচ্ছে।"
অন্যদিকে, গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকিট ১ লাখ, আর পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট ২ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতির নেতৃত্বে পথে নামেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। চলে অবস্থান-বিক্ষোভ। গোটা দলটাই দুর্নীতিগ্রস্ত বলে কটাক্ষ করে বিজেপি। কেউ দলবিরোধী কাজ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পাল্টা সাফাই দেয় তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব।