বাপন সাঁতরা, হুগলি: প্রায় ১৪ বছর আগে গোঘাটে তৃণমূল কর্মীকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার ১২ জন তৃণমূল কর্মী-সহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করল আরামবাগ মহকুমা আদালত। গুলি করে খুনের ঘটনায় ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। তাদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত বলদেব পালকে ফাঁসি ও বাকি ১৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন, 'উপনির্বাচনে তৃণমূল জিতবে, সবার জানা, জয় মানে বাচ্চা মেয়ের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ?..', প্রতিক্রিয়া সেলিম-সুজনদের

দোষীদের মধ্যে ৬ জন সিপিএম, ১জন ফরওয়ার্ড ব্লক ও ১২ জন তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত।এদের মধ্যে একজন বর্তমানে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য তথা প্রাক্তন প্রধান রয়েছেন। জানা গেছে, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে গোঘাটের সাওড়া ইউনিয়ন হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল বাঁধে। সেখানেই প্রকাশ্যে দিনের আলোয় গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী শেখ নইমুদ্দিনকে। তারপর তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তথা বর্তমানের গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক-সহ ৩০ জনের নামে অভিযোগ হয়। তার মধ্যে ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ১৪ বছর ধরে এই মামলা চলার পর এদিন সাজা দিল আরামবাগ আদালত। 

যদিও এই ঘটনায় তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তথা বর্তমান গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারককে সোমবার বেকসুর খালাস করে আদালত।তবে এই রায়ে খুশি নয় অভিযুক্তদের পরিবার। তাঁরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন যদিও এই ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি, সাওড়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান তথা বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্য তাপস খাঁ-এর মায়ের। অভিযোগ, তৃণমূল দুটি গোষ্ঠীর ফলে অন্য গোষ্ঠীর লোকেরা তাঁর ছেলেকে ফাঁসিয়েছে।তবে ঘটনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা এড়িয়ে গোঘাট ১ তৃণমূল ব্লক সভাপতি বলেন, অপরাধীদের কোনও রাজনৈতিক রং হয় না। বিচারক দোষীদের সাজা ঘোষণা করছেন। আদালতের রায় সকলকে মানতে হবে।'

সাম্প্রতিককালে শাসকদলের একাধিক নেতা খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তার মধ্যে অন্যতম মালদায় তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুন। পাশাপাশি বসিরহাটে চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে খুন হন তৃণমূল কর্মী। বাড়ির কাছে বাজারের মধ্যে ঘিরে ধরে গুলি করে, কুপিয়ে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। নিহত তৃণমূল কর্মী বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।