সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুঁচুড়া : একেই বলে "রাখে হরি তো মারে কে !" সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন এক ব্যক্তি। চলন্ত ট্রেনের তলায় পড়ে গিয়েও অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন। স্বামীকে এভাবে পড়ে যেতে দেখে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন স্ত্রীও। বরাত জোরে বেঁচে যান তিনিও।


আজ সকালে ১০টা ১২ মিনিটের ডাউন বর্ধমান লোকাল একটু দেরিতে চুঁচুড়া স্টেশনে (Chunchura Station) ঢোকে। আগের কাটোয়া লোকাল (Katwa Local) বাতিল হয়ে যাওয়ায় প্ল্যাটফর্মে তখন বেশ ভালোই ভিড় ছিল। তাই ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় যাত্রীদের মধ্যে। সেই সময় ব্যাগপত্তর, কয়েকটি আলুর বস্তা ট্রেনের মাঝামাঝি কামরায় তুলে নিজে উঠতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে ট্রেনের তলায় পড়ে যান তরুণ মুখি নামে ওই ব্যক্তি।


ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মের ফাঁক গলে স্বামীকে পড়ে যেতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্ত্রী ললিতা। ট্রেন তখন ধীরে ধীরে চলতে শুরু করেছে। হঠাৎ ঝাঁপ দেন ললিতাও। প্ল্যাটফর্মে ছিটকে পড়তেই হইহই করে ওঠেন সবাই। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ছুটে যান কর্তব্যরত জিআরপি কর্মী। সবাই মিলে তাঁকে তোলেন। স্বামীর চিন্তায় কান্নায় ভেঙে পড়েন ললিতা। যদিও ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরোতে দেখা যায়, উঠে আসছেন তরুণ। সুস্থ, তাঁর গায়ে আঁচরও লাগেনি। প্ল্যাটফর্মে বসার জায়গায় বসে নিজেই বললেন, নতুন জীবন পেলাম। এনিয়ে স্ত্রীর আকুতি দেখে শপথ নেন, আর নেশা করবেন না।


তরুণ ও ললিতা জানান, তাঁরা দিনমজুর। ঝাড়গ্রাম থেকে হুগলিতে আলু তোলার কাজ করতে এসেছিলেন। মাস খানেক ধরে পোলবার বীরেন্দ্রনগর ডুবির ভেড়ি অঞ্চলে আলু তোলার কাজ করছিলেন। দু'জন শিশু সহ ২২ জনের দল তাঁদের। আজ সবাই মিলে দেশের বাড়ি ঝাড়গ্রামে ফিরছিলেন। চুঁচুড়া থেকে হাওড়া যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরে। ভিড় ট্রেনে উঠতে গিয়েই বিপত্তি বাধে।


তরুণ বলেন, একটু নেশা করেছিলাম। ভুল হয়েছিল, নতুন জীবন পেয়েছি। আর নেশা করব না। ট্রেনে চলে যাওয়া সঙ্গীদের ফোন করে খবর দিয়ে পরের হাওড়া যাওয়ার ট্রেন ধরেন দম্পতি।