সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর : গত শুক্রবারই মাঝরাতে বাইক দুর্ঘটনায় আহত এক যুবককে এসএসকেএমে ভর্তি করাতে গিয়ে বিতর্কে জড়ান তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। এবার শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে রোগী ভর্তিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কাউন্সিলরের সঙ্গে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বচসার ভিডিও ভাইরাল ! যা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।


গতকাল শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে এক যুবতীকে ভর্তি করাতে নিয়ে যান ডানকুনি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সূর্য দে। তিনি জানান, গতকাল রাত ১২টা নাগাদ তাঁর ওয়ার্ডের এক যুবতী টুম্পা মইশাল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে প্রথমে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু, সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে রোগী ভর্তিকে কেন্দ্র করে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে বচসা বাধে। বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন কাউন্সিলর। তিনি বলেন, হাসপাতলের এক একজন এক একরকম কথা বলছিলেন। কেউ বলছেন, ভর্তি করতে, কেউ বলছেন বাড়ি নিয়ে চলে যেতে। কোনও সমন্বয় নেই। টিকিট করতে গেলেও টালবাহানা করা হয়।


নিজে কাউন্সিলর পরিচয় দেননি বলে দাবি করে সূর্য দে বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গেও এধরনের ব্যবহার করা হয়। পরে অবশ্য রোগী ভর্তি নেওয়া হয়। তাই হাসপাতাল সুপার বা অন্য কাউকে অভিযোগ করেননি।


এনিয়ে হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইঞা জানান, কী ঘটনা ঘটেছে তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায় নিজে একজন চিকিৎসক। IMA-র সঙ্গে যুক্ত। শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন একসময়। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যায়। তাই রোগীর চাপ বেশি। মানুষকে ধৈর্য্য ধরতে হবে চিকিৎসা করাতে এসে। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও উত্তেজিত হলে চলবে না। শাসক বিরোধী ব্যাপার নয়, প্রত্যেকেই চায় তার নিজের লোকের চিকিৎসাটা যেন হয়।


বিজেপি এই ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। রাজ্য কমিটির সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, এতেই বোঝা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।


প্রসঙ্গত, শুক্রবার মাঝরাতে, বাইক দুর্ঘটনায় আহত এক যুবককে এসএসকেএমে ভর্তি করাতে নিজে ছুটে যান মদন মিত্র। এরপর, SSKM কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শনিবার তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রর বেনজির সংঘাত তৈরি হয় ! খোদ মদন মিত্র এসএসকেএম বয়কটের ডাক দেন। এরপর, পরিস্থিতি সামাল দিতে নামতে হয় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে।