পোলবা (হুগলি) : দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশন, দিদির দূত, দুয়ারে পিজি-র পর এবার কি দুয়ারে পুলিশ (Duare Police) ? পানীয় জল, রাস্তাঘাট-সহ দৈনন্দিন সমস্যার কথা শুনতে এবার দুয়ারে কড়া নাড়ছে পুলিশ। গতকাল হুগলির (Hooghly) পোলবায় ধরা পড়েছে এই ছবি। সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনতে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরল পোলবা থানার পুলিশ।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে পুলিশের এহেন ভূমিকায় অবাক গ্রামবাসী। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন হুগলি গ্রামীণের পুলিশ সুপার। যদিও প্রশাসনকে দলের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি। ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে পাল্টা দাবি করেছে শাসক শিবির।
বিরোধীদের খোঁচা-
এনিয়ে রাজ্য সরকারকে একহাত নিল বিজেপি। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, "এতদিন সমাজবিরোধী, তোলাবাজ, গুণ্ডাদের সঙ্গে পুলিশ সম্পর্ক দৃঢ় করল। ভোটের আগে নেমেছে জনগণের সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে। এটা একেবারে নাটক শুধু নয়, ডাহা মিথ্যা কথা। এরা গিয়েছে নির্বাচনের আগে গ্রামের হালহকিকত চেক করতে এবং বিরোধীদের সেট করতে। এরা গ্রামের পরিস্থিতি সরেজমিনে তদন্ত করতে গেছে। আমার প্রশ্ন, দুয়ারে তো দিদির দূত ছিল, তাহলে দুয়ারে দিদির দূতেরা কী করছে ? আজকে পুলিশ যদি গিয়ে আপনি কেমন আছেন ? পঞ্চায়েতের কাজকর্ম কেমন চলছে, পানীয় জল পাচ্ছেন কি না...এই প্রশ্ন করেন, তাহলে এতদিন ধরে যে পঞ্চায়েতের লোকগুলোকে পোষা হলল লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা খরচ হল, তাহলে তাঁরা কী কাজ করলেন ? সরকার দিশেহারা হয়ে গেছে। মাথার ঠিক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মানসিকভাবে সুস্থ নয় এই মুহূর্তে। অন্য কিছু নয়, এখন সম্পর্ণভাবে বুঝে গেছেন, দিদির দূত সম্পূর্ণভাবে ফ্লপ। উল্টে বুমেরাং হয়েছে। এখন উনি যেটা চাইছেন, ডাইরেক্ট হুমকি দেব। উনি ভয় দেখানোর জন্য পুলিশ পাঠেয়েছেন। পুলিশ যদি কথা বলতে যাবে সিভিল ড্রেসে গেল না কেন ? এই পুলিশ দেখলে তো মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাবে।"
এনিয়ে সুর চড়িয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, "দুয়ারে দূতের নামে ভূত গেছে। এখন আসছে দুয়ারে পুলিশ। পুলিশের কাজ কম পড়ে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু, আইন-শৃঙ্খলা দেখতে হবে না। দুষ্কৃতীরা যা পারছে করে বেরাবে। কিন্তু, পুলিশের কোনও করণীয় নেই। পঞ্চায়েতের দফতর ঠ্যাং তুলে বসে আছে। তারা তাদের কাজ করছে না। অর্থাৎ যে যার নিজের কাজ ছেড়ে অন্যের কাজ করছে। সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা। শাসকের আইন চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের অপদার্থতা ধরা পড়ে যাচ্ছে।"
যদি এনিয়ে তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয় সেলের চেয়ারম্যান দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, "পুলিশ যদি মনে করে সাধারণ মানুষের আস্থা তৈরি করে তাদের সঙ্গে জনসংযোগ আর একটু দৃঢ় করবে। সুজনবাবুদের সময় পুলিশ ও মানুষের মধ্যে সম্পর্কটা এমন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল, যেভাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পার্টি অফিস, ডিভোর্স থেকে শুরু করে সব কিছুর পার্টি অফিসে সমাধান করা হতো, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসার পর, প্রশাসনের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক অনেকটা নিবিড় হয়েছে। সেটা আরও একটু নিবিড় করার জন্য পুলিশ প্রশাসন যদি আরও একটু চেষ্টা করে তাতে বিরোধীদের এত কেন সমস্যা বুঝতে পারি না। "
আরও পড়ুন ; ১০০ কোটি তোলার অভিযোগ, চিটফান্ডকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার খানাকুলের তৃণমূল নেতা