সোমনাথ মিত্র, হুগলি: বধূমৃত্যুতে স্বামী, শ্বশুর ও দেওরকে গ্ৰেফতার করল সিঙ্গুর (Singur) থানার পুলিশ। মৃত গৃহবধূর নাম মনি পাকিরা (২২), বাড়ি সিঙ্গুরের দৌলতপুর গ্ৰামে। অভিযুক্ত তিন জনকে মঙ্গলবার রাতেই সিঙ্গুরের দৌলতপুর গ্ৰাম থেকে গ্ৰেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্তদের আজ মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কী অভিযোগ:
গতকাল রাতে সিঙ্গুর হাসপাতাল থেকে পুলিশের কাছে খবর যায় এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে সিঙ্গুর থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে আনে। পরিবারে পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছিল গৃহবধূ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে । ঘটনার পর গতকাল রাতেই মৃতের বাপের বাড়ি র লোকজন সিঙ্গুর থানায় উপস্থিত হয়ে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । সেই মতো রাতেই মৃত গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও দেওরকে গ্রেফতার করে সিঙ্গুর থানার পুলিশ। ধৃতরা হল মৃত গৃহবধূর স্বামী মিলন পাকিরা, গৃহবধূর শ্বশুর স্বপন কুমার পাকিরা, মৃতের দেওর মৃণাল পাকিরা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান জেলার কালনা থানার মণি সিংহের সঙ্গে ২০১৮ সালে বিয়ে সিঙ্গুরের দৌলতপুরের বাসিন্দা মিলন পাকিরার। বিয়ের সময় ছেলের পরিবারের কোনও দাবি-দাওয়া না থাকলেও বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা এবং পণের দাবিতে মনির উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো বলে পরিবারের অভিযোগ। সাধ্যমতো দাবি-দাওয়া পূরণ করলেও অত্যাচার চালানো হতো বলে গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ। আর সেই কারণেই মেয়েকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
বাড়ির লোকেদের দাবি:
মৃত গৃহবধূর বাবা মানিক সিংহ বলেন, 'বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে মারধর করত, মেয়েকে অত্যাচার করত। ঘটনার পর এখন বলছে মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে। কিন্তু আমাদের দাবি, ওরা চারজন মিলে মেয়েকে মেরে দিয়েছে।' মৃত গৃহবধূর বোন মনি সিংহ দাবি করেন, 'টাকা-পয়সার জন্য আমার দিদিকে খুন করেছে ওরা। দিদি দুপুর ২টোর সময় মেসেজ করেছিল সে ভাল আছে, তারপর সে কিভাবে মরতে পারে?' পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আরও পড়ুন: পুলিশকর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যে নজর, চালু 'লেটস ওপেন আপ'